Luke1:26-38
লূক 1
হযরত ঈসা মসীহের জন্মের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী
26-27এলিজাবেতের যখন ছয় মাসের গর্ভ তখন আল্লাহ্গালীল প্রদেশের নাসরত গ্রামের মরিয়ম নামে একটি অবিবাহিতা সতী মেয়ের কাছে জিবরাইল ফেরেশতাকে পাঠালেন। বাদশাহ্দাউদের বংশের ইউসুফ নামে একজন লোকের সংগে তাঁর বিয়ের কথাবার্তা ঠিক হয়েছিল।
28ফেরেশতা মরিয়মের কাছে এসে তাঁকে সালাম জানিয়ে বললেন, “মাবুদ তোমার সংগে আছেন এবং তোমাকে অনেক দোয়া করেছেন।”
29এই কথা শুনে মরিয়মের মন খুব অস্থির হয়ে উঠল। তিনি ভাবতে লাগলেন এই রকম সালামের মানে কি।
30ফেরেশতা তাঁকে বললেন, “মরিয়ম, ভয় কোরো না, কারণ আল্লাহ্তোমাকে খুব রহমত করেছেন।
31শোন, তুমি গর্ভবতী হবে আর তোমার একটি ছেলে হবে। তুমি তাঁর নাম ঈসা রাখবে।
32তিনি মহান হবেন। তাঁকে আল্লাহ্তা’লার পুত্র বলা হবে। মাবুদ আল্লাহ্তাঁর পূর্বপুরুষ বাদশাহ্দাউদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন।
33তিনি ইয়াকুবের বংশের লোকদের উপরে চিরকাল ধরে রাজত্ব করবেন। তাঁর রাজত্ব কখনও শেষ হবে না।”
34তখন মরিয়ম ফেরেশতাকে বললেন, “এ কেমন করে হবে? আমার তো বিয়ে হয় নি।”
35ফেরেশতা বললেন, “পাক-রূহ্তোমার উপরে আসবেন এবং আল্লাহ্তা’লার শক্তির ছায়া তোমার উপরে পড়বে। এইজন্য যে পবিত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করবেন তাঁকে ইব্নুল্লাহ্বলা হবে।
36দেখ, এই বুড়ো বয়সে তোমার আত্মীয়া এলিজাবেতের গর্ভেও ছেলের জন্ম হয়েছে। লোকে বলত তার ছেলেমেয়ে হবে না, কিন্তু এখন তার ছয় মাস চলছে।
37আল্লাহ্র কাছে অসম্ভব বলে কোন কিছুই নেই।”
38মরিয়ম বললেন, “আমি মাবুদের বাঁদী, আপনার কথামতই আমার উপর সব কিছু হোক।” এর পরে ফেরেশতা মরিয়মের কাছ থেকে চলে গেলেন।
Luke2:1-20
লূক 2
হযরত ঈসা মসীহের জন্ম
1সেই সময়ে সম্রাট অগাস্টাস সিজার তাঁর রাজ্যের সব লোকদের নাম লেখাবার হুকুম দিলেন।
2সিরিয়ার শাসনকর্তা কুরীণিয়ের সময়ে এই প্রথমবার আদমশুমারীর জন্য নাম লেখানো হয়।
3নাম লেখাবার জন্য প্রত্যেকে নিজের নিজের গ্রামে যেতে লাগল।
4-6ইউসুফ ছিলেন বাদশাহ্দাউদের বংশের লোক। বাদশাহ্দাউদের জন্মস্থান ছিল এহুদিয়া প্রদেশের বেথেলহেম গ্রামে। তাই ইউসুফ নাম লেখাবার জন্য গালীল প্রদেশের নাসরত গ্রাম থেকে বেথেলহেম গ্রামে গেলেন। মরিয়মও তাঁর সংগে সেখানে গেলেন। এঁরই সংগে ইউসুফের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। সেই সময় মরিয়ম গর্ভবতী ছিলেন এবং বেথেলহেমে থাকতেই তাঁর সন্তান জন্মের সময় এসে গেল।
7সেখানে তাঁর প্রথম ছেলের জন্ম হল, আর তিনি ছেলেটিকে কাপড়ে জড়িয়ে যাবপাত্রে রাখলেন, কারণ হোটেলে তাঁদের জন্য কোন জায়গা ছিল না।
ফেরেশতা ও রাখালেরা
8বেথেলহেমের কাছে মাঠের মধ্যে রাতের বেলায় রাখালেরা তাদের ভেড়ার পাল পাহারা দিচ্ছিল।
9এমন সময় মাবুদের একজন ফেরেশতা হঠাৎ তাদের সামনে উপস্থিত হলেন। তখন মাবুদের মহিমা তাদের চারদিকে উজ্জ্বল হয়ে দেখা দিল। এতে রাখালেরা খুব ভয় পেল।
10ফেরেশতা তাদের বললেন, “ভয় কোরো না, কারণ আমি তোমাদের কাছে খুব আনন্দের খবর এনেছি। এই আনন্দ সব লোকেরই জন্য।
11আজ দাউদের গ্রামে তোমাদের নাজাতদাতা জন্মেছেন। তিনিই মসীহ্, তিনিই প্রভু।
12এই কথা যে সত্যি তোমাদের কাছে তার চিহ্ন হল এই- তোমরা কাপড়ে জড়ানো এবং যাবপাত্রে শোয়ানো একটি শিশুকে দেখতে পাবে।”
13এই সময় সেই ফেরেশতার সংগে হঠাৎ সেখানে আরও অনেক ফেরেশতাকে দেখা গেল। তাঁরা আল্লাহ্র প্রশংসা করে বলতে লাগলেন,
14“বেহেশতে আল্লাহ্র প্রশংসা হোক,
দুনিয়াতে যাদের উপর তিনি সন্তুষ্ট
তাদের শান্তি হোক।”15ফেরেশতারা তাদের কাছ থেকে বেহেশতে চলে যাবার পর রাখালেরা একে অন্যকে বলল, “চল, আমরা বেথেলহেমে যাই এবং যে ঘটনার কথা মাবুদ আমাদের জানালেন তা গিয়ে দেখি।”
16তারা তাড়াতাড়ি গিয়ে মরিয়ম, ইউসুফ ও যাবপাত্রে শোয়ানো সেই শিশুটিকে তালাশ করে বের করল।
17তাদের কাছে ঐ শিশুর বিষয়ে যা জানানো হয়েছিল, শিশুটিকে দেখবার পরে তারা তা বলল।
18রাখালদের কথা শুনে সবাই আশ্চর্য হল;
19কিন্তু মরিয়ম সব কিছু মনে গেঁথে রাখলেন, কাউকে বললেন না; তিনি সেই বিষয়ে চিন্তা করতে থাকলেন।
20ফেরেশতারা রাখালদের কাছে যা বলেছিলেন সব কিছু সেইমত দেখে ও শুনে তারা আল্লাহ্র প্রশংসা ও গৌরব করতে করতে ফিরে গেল।