ইশাইয়া 66
বিচার ও আশা
1মাবুদ বলছেন, “বেহেশত আমার সিংহাসন আর দুনিয়া আমার পা রাখবার জায়গা। তোমরা আমার জন্য কোথায় ঘর তৈরী করবে? আমার বিশ্রামের স্থান কোথায় হবে? 2এই সব জিনিস আমি নিজের হাতে তৈরী করেছি আর তাই এই সব হয়েছে। যে লোক নম্র, যার মন ভেংগে চুরমার হয়েছে এবং যে আমার কথায় কাঁপতে থাকে তাকে আমি ভাল চোখে দেখব। 3কিন্তু যে একটা গরু কোরবানী করছে সে যেন মানুষ খুন করছে, যে একটা ভেড়ার বাচ্চা কোরবানী করছে সে যেন কুকুরের ঘাড় ভেংগে দিচ্ছে, যে শস্য কোরবানী করছে সে যেন শূকরের রক্ত দিচ্ছে, আর যে আমার উদ্দেশে ধূপ জ্বালাচ্ছে সে যেন মূর্তি পূজা করছে। তারা তাদের নিজের নিজের পথ বেছে নিয়েছে; তাদের ঘৃণার জিনিসগুলোতে তারা তৃপ্ত হয়। 4তাই আমিও তাদের উপর শাস্তির ব্যবস্থা বেছে নেব আর তারা যা ভয় করে তা-ই তাদের উপর আনব, কারণ আমি ডাকলে কেউ জবাব দেয় নি, আমি কথা বললে কেউ শোনে নি। আমার চোখে যা খারাপ তা-ই তারা করেছে, আর আমাকে যা অসন্তুষ্ট করে তা-ই তারা বেছে নিয়েছে।”
5তোমরা যারা মাবুদের কথায় কাঁপ তোমরা তাঁর কথা শোন। তিনি বলছেন, “তোমাদের ভাইয়েরা তোমাদের ঘৃণা করে আর আমার জন্য তোমাদের বাতিল করে। তারা ঠাট্টা করে বলে, ‘মাবুদের গৌরব হোক, আমরা যেন তোমাদের আনন্দ দেখতে পাই।’ কিন্তু তারা নিজেরাই লজ্জায় পড়বে। 6শোন, শহরে গণ্ডগোল হচ্ছে; শোন, বায়তুল-মোকাদ্দসে হৈ চৈ হচ্ছে; এ তো মাবুদের আওয়াজ- তাঁর শত্রুদের যা পাওনা তিনি তা-ই দিচ্ছেন।
7“প্রসব-বেদনা উঠবার আগেই সিয়োন সন্তানের জন্ম দিয়েছে; তার ব্যথা উঠবার আগেই সে এক ছেলের জন্ম দিয়েছে। 8কে এই রকম কথা শুনেছে? কে এই রকম ঘটনা দেখেছে? একটা দেশ কি এক দিনে জন্ম নিতে পারে? কিংবা একটা জাতির কি এক মুহূর্তে জন্ম হয়? কিন্তু সিয়োনের ব্যথা উঠতে না উঠতেই সে তার সন্তানদের জন্ম দিয়েছে। 9আমি তোমার মাবুদ আল্লাহ্বলছি, ‘জন্মের মুহূর্ত পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে গিয়ে আমি কি জন্ম দিতে দেব না? আমি যখন জন্ম দেবার ব্যবস্থা করেছি তখন কি আমি জন্ম দিতে দেব না?’ ”
10তোমরা যারা জেরুজালেমকে ভালবাস তোমরা তার সংগে আনন্দ কর, তার জন্য খুশী হও; তোমরা যারা তার জন্য দুঃখ করেছ তোমরা তার সংগে আনন্দিত হও। 11তোমরা বুকের দুধ খেয়ে সান্ত্বনা পাওয়া শিশুর মত জেরুজালেমের উপ্চে পড়া উন্নতি ভোগ করে তৃপ্ত হবে।
12মাবুদ বলছেন, “আমি তার দিকে নদীর মত করে উন্নতি বইয়ে দেব, আর জাতিদের ধন-সম্পদ তার কাছে বন্যার মত আসবে। তোমরা এমন শিশুর মত হবে যাকে দুধ খাইয়ে কোলে করে নেওয়া হয় আর হাঁটুর উপরে নাচানো হয়। 13মা যেমন তার সন্তানকে সান্ত্বনা দেয় তেমনি আমি তোমাদের সান্ত্বনা দেব; আর তোমরা জেরুজালেমে সান্ত্বনা পাবে।”
14এই সব দেখে তোমাদের দিল আনন্দিত হবে আর তোমরা ঘাসের মতই বেড়ে উঠবে। মাবুদের গোলামেরা তাঁর শক্তি দেখতে পাবে, আর তাঁর শত্রুরা দেখতে পাবে তাঁর রাগ। 15দেখ, মাবুদ আগুনের মধ্যে আসবেন আর তাঁর রথগুলো ঘূর্ণিবাতাসের মত আসবে। তাঁর রাগ তিনি ভয়ংকরভাবে প্রকাশ করবেন, আর তাঁর বকুনি আগুনের শিখায় প্রকাশিত হবে। 16মাবুদ আগুন ও তলোয়ার সংগে নিয়ে সমস্ত মানুষের উপর তাঁর বিচারের কাজ চালাবেন; তিনি যাদের মেরে ফেলবেন তাদের সংখ্যা হবে অনেক। 17মাবুদ বলছেন, “যারা শূকর ও ইঁদুরের গোশ্ত আর অন্যান্য জঘন্য জিনিস খায় এবং অনুষ্ঠান্তপরিচালকের পিছনে পিছনে পূজার বাগানে যাবার জন্য দেবতাদের উদ্দেশ্যে নিজেদের আলাদা করে রাখে ও পাক-সাফ করে, তারা একসংগে শেষ হয়ে যাবে। 18আমি তাদের সব কাজ ও কল্পনার কথা জানি। সমস্ত জাতি ও ভাষার লোকদের একত্র করবার সময় এসে গেছে। তারা এসে আমার মহিমা দেখতে পাবে।”
19মাবুদ আরও বলছেন, “আমি তাদের মধ্যে একটা চিহ্ন স্থাপন করব এবং যারা বেঁচে থাকবে তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে আমি জাতিদের কাছে পাঠাব- সেপন, পূল ও নাম-করা ধনুকধারী লিডিয়া, তূবল ও গ্রীসের কাছে এবং যে সব দূরের দেশগুলো আমার সুনাম শোনে নি ও আমার মহিমাও দেখে নি তাদের কাছে পাঠাব। তারা জাতিদের মধ্যে আমার মহিমার কথা ঘোষণা করবে। 20মাবুদের উদ্দেশে কোরবানী হিসাবে তারা সমস্ত জাতির মধ্য থেকে তোমাদের ভাইদের রথ ও গাড়িতে করে এবং ঘোড়া, গাধা ও উটে করে নিয়ে আমার পবিত্র পাহাড় জেরুজালেমে আসবে। বনি-ইসরাইলরা যেমন পাক-সাফ পাত্রের মধ্যে শস্য-কোরবানীর জিনিস আনে তেমনি করে তারা মাবুদের ঘরে তাদের নিয়ে আসবে। 21আমি তাদের মধ্য থেকে কয়েকজন লেবীয়কে ইমাম ও খেদমতকারী হবার জন্য বেছে নেব।”
22মাবুদ বলছেন, “যে নতুন আসমান ও নতুন জমীন আমি তৈরী করব তা যেমন আমার সামনে টিকে থাকবে তেমনি তোমাদের নাম ও তোমাদের বংশধরেরাও টিকে থাকবে। 23প্রত্যেক অমাবস্যায় ও প্রত্যেক বিশ্রামবারে সমস্ত লোক আমার সামনে এসে আমার এবাদত করবে। 24তারা বের হয়ে সেই সব লোকদের লাশ দেখবে যারা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। যে সব পোকা তাদের লাশ খায় সেগুলো মরবে না ও যে আগুন তাদের পোড়ায় তা নিভবে না, আর তারা সমস্ত মানুষের ঘৃণার পাত্র হবে।”