ইয়ারমিয়া 15
1তখন মাবুদ আমাকে বললেন, “মূসা ও শামুয়েলও যদি আমার সামনে এসে দাঁড়ায় তবুও আমার দিল এই লোকদের জন্য নরম হবে না। আমার সামনে থেকে তুমি এদের বিদায় কর; তারা চলে যাক। 2আর যদি তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, ‘আমাদের কি হবে?’ তবে তাদের বলবে, ‘মাবুদ এই কথা বলছেন যে, মৃত্যুর জন্য যারা নির্দিষ্ট হয়ে আছে তাদের মৃত্যু হবে; তলোয়ারের জন্য যারা নির্দিষ্ট হয়ে আছে তারা যুদ্ধে মারা যাবে; দুর্ভিক্ষের জন্য যারা নির্দিষ্ট হয়ে আছে তারা দুর্ভিক্ষে মারা যাবে; আর বন্দী হবার জন্য যারা নির্দিষ্ট হয়ে আছে তারা বন্দী হবে।’ ”
3মাবুদ বলছেন, “আমি তাদের বিরুদ্ধে চার রকম ধ্বংসকারীকে পাঠিয়ে দেব। সেগুলো হল, হত্যা করবার জন্য তলোয়ার, টেনে নিয়ে যাবার জন্য কুকুর, খেয়ে ফেলবার ও ধ্বংস করবার জন্য আকাশের পাখী ও বনের পশু। 4এহুদার বাদশাহ্হিষ্কিয়ের ছেলে মানশা জেরুজালেমে যা করেছে তার জন্য আমি যে শাস্তি দেব তা দেখে দুনিয়ার সব রাজ্যের লোকেরা ভয় পাবে।
5“হে জেরুজালেম, কে তোমার উপর দয়া করবে? কে তোমার জন্য শোক করবে? তুমি কেমন আছ তা জিজ্ঞাসা করবার জন্য কে আসবে? 6আমি মাবুদ বলছি যে, তুমি আমাকে ত্যাগ করেছ, তুমি উল্টা পথে গিয়েছ। সেইজন্য আমি তোমার দিকে হাত বাড়িয়ে তোমাকে ধ্বংস করব; আমি আর মমতা করতে পারি না। 7দেশের শহর-দরজার কাছে আমি কুলায় করে তোমার লোকদের ঝাড়ব। আমার বান্দাদের উপর আমি সন্তানের মৃত্যুর শোক আনব ও তাদের ধ্বংস করব, কারণ নিজেদের পথ থেকে তারা ফেরে নি। 8তাদের বিধবাদের সংখ্যা আমি সমুদ্রের বালির চেয়েও বেশী করব। তুমি তো যোদ্ধাদের মা, তোমার লোকদের বিরুদ্ধে দুপুরবেলায় আমি একজন ধ্বংসকারীকে আনব; আমি তাদের উপর হঠাৎ যন্ত্রণা ও ভয় আনব। 9সাত সন্তানের মা দুর্বল হয়ে লজ্জিত ও অপমানিত অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ফেলবে। সময় থাকতেই তার জীবনের সূর্য ডুবে যাবে। যারা বেঁচে থাকবে তাদেরও আমি শত্রুদের তলোয়ারের সামনে দেব। আমি মাবুদ এই কথা বলছি।”
10হায়! হায়! মা আমার, তুমি কেন আমাকে জন্ম দিয়েছ, যার সংগে গোটা দেশটা ঝগড়া ও লড়াই করে? আমি ধার দিই নি কিংবা কেউ আমাকে ধারও দেয় নি, তবুও প্রত্যেকে আমাকে বদদোয়া দেয়।
11মাবুদ বললেন, “একটা উপকারের উদ্দেশ্যে আমি নিশ্চয় তোমাকে রেহাই দেব। আমি এমন অবস্থা সৃষ্টি করব যার ফলে বিপদ ও দুর্দশার সময়ে তোমার শত্রুরা অবশ্য তোমার কাছে এসে মিনতি করবে।
12“কোন লোক কি উত্তর দেশের লোহা বা ব্রোঞ্জ ভেংগে ফেলতে পারে? 13হে এহুদা, সারা দেশের মধ্যে তোমার সমস্ত গুনাহের দরুন আমি তোমার ধন ও ধনভাণ্ডারের জিনিসপত্র বিনামূল্যে লুটের মাল হিসাবে দেব। 14যে দেশের কথা তুমি জান না সেই দেশে আমি তোমাকে তোমার শত্রুদের গোলাম করব, কারণ আমার গজবের আগুন জ্বলে উঠে তোমার উপর জ্বলতে থাকবে।”
15হে মাবুদ, তুমি তো সবই বুঝতে পার; কাজেই আমার কথা স্মরণ কর ও আমার প্রতি মনোযোগ দাও। আমার জুলুমবাজদের উপর তুমিই প্রতিশোধ নাও। তুমি তো তাদের উপর অনেক ধৈর্য ধরে থাক, কিন্তু তাই বলে তাদের হাতে তুমি আমাকে ধ্বংস হতে দিয়ো না; মনে করে দেখ, আমি তোমার জন্য কেমন টিট্কারি সহ্য করছি। 16তোমার কালাম প্রকাশিত হলে পর আমি তা অন্তরে গ্রহণ করলাম; সেই কালাম ছিল আমার আনন্দ ও আমার দিলের সুখ, কারণ হে মাবুদ আল্লাহ্রাব্বুল আলামীন, আমি তো তোমারই। 17যারা হৈ হুল্লোড় করে মদ খায় আমি কখনও তাদের দলে বসি নি, তাদের সংগে কখনও আনন্দ করি নি; তোমার হাত আমার উপরে ছিল বলে আমি একাই বসে থাকতাম আর তুমি আমাকে রাগে পরিপূর্ণ করেছ। 18কেন আমার ব্যথার শেষ নেই, কেন আমার ঘা ভাল হয় না, কেন তা সারানো যায় না? তুমি কি আমার কাছে মিথ্যা স্রোত ও অস্থায়ী ঝর্ণার পানির মত হবে?
19তখন মাবুদ বললেন, “তুমি যদি মন ফিরাও তবে আমি তোমাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনব যাতে তুমি আমার এবাদত করতে পার; যদি তুমি বাজে কথা না বলে মূল্যবান কথা বল তবে তুমি আমার মুখ হয়ে কথা বলবে। এই লোকেরা তোমার দিকে ফিরুক, কিন্তু তুমি তাদের দিকে ফিরবে না। 20এই লোকদের কাছে আমি তোমাকে ব্রোঞ্জের একটা শক্তিশালী দেয়ালের মত করব; তারা তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে কিন্তু তোমাকে হারিয়ে দিতে পারবে না, কারণ আমি মাবুদ বলছি যে, তোমাকে উদ্ধার করতে ও বাঁচাতে আমি তোমার সংগে সংগে থাকব। 21আমি তোমাকে দুষ্টদের হাত থেকে রক্ষা করব এবং নিষ্ঠুরদের মুঠি থেকে মুক্ত করব।”