ইয়ারমিয়া 22
দুষ্ট বাদশাহ্দের বিচার
1মাবুদ আমাকে এহুদার রাজবাড়ীতে গিয়ে এই সংবাদ ঘোষণা করতে বললেন, 2“দাউদের সিংহাসনে বসা হে এহুদার বাদশাহ্, আপনি, আপনার রাজকর্মচারীরা এবং আপনার যে সব লোকেরা এই দরজার মধ্য দিয়ে আসেন, আপনারা সকলে মাবুদের কালাম শুনুন। 3মাবুদ বলছেন, ‘যা ন্যায্য ও ঠিক তোমরা তা-ই কর। যাকে লুট করা হয়েছে তাকে তার অত্যাচারীর হাত থেকে উদ্ধার কর। বিদেশী, এতিম ও বিধবাদের প্রতি কোন অন্যায় বা জুলুম কোরো না এবং এই জায়গায় নির্দোষের রক্তপাত কোরো না। 4তোমরা যদি এই হুকুম পালন কর তবে তোমাদের বাদশাহ্রা দাউদের সিংহাসনে বসে রাজত্ব করবে এবং তাদের রাজকর্মচারী ও লোকজন নিয়ে রথে ও ঘোড়ায় চড়ে এই রাজবাড়ীর দরজা দিয়ে ভিতরে আসবে। 5কিন্তু যদি তোমরা এই সব হুকুম পালন না কর তবে আমি মাবুদ আমার নিজের নামেই কসম খেয়ে বলছি যে, এই রাজবাড়ী ধ্বংস হয়ে যাবে।’ ”
6এহুদার রাজবাড়ীর সমস্ত জায়গা সম্বন্ধে মাবুদ বলছেন, “যদিও তুমি আমার কাছে গিলিয়দের মত এবং লেবাননের চূড়ার মত তবুও আমি তোমাকে নিশ্চয়ই মরুভূমির মত কিংবা লোকশূন্য শহরগুলোর মত করব। 7আমি তোমার বিরুদ্ধে ধ্বংসকারীদের পাঠাব; তাদের প্রত্যেকের হাতে অস্ত্র থাকবে। তারা তোমার ভাল ভাল এরস গাছগুলো কেটে আগুনে ফেলবে।
8“বিভিন্ন জাতির লোকেরা এই শহরের পাশ দিয়ে যাবার সময় একে অন্যকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘এই মহা শহরের প্রতি কেন মাবুদ এমন করলেন?’ 9তার জবাব হবে, ‘কারণ তারা তাদের মাবুদ আল্লাহ্র স্থাপন করা ব্যবস্থা ত্যাগ করে দেব-দেবীর পূজা ও এবাদত করছিল।’ ”
বাদশাহ্শল্লুম সম্বন্ধে হযরত ইয়ারমিয়া (আঃ)-এর কথা
10তোমরা মৃত বাদশাহ্র জন্য কেঁদো না কিংবা বিলাপ কোরো না; তার চেয়ে বরং যিনি বন্দী হয়ে দূরে গেছেন তাঁর জন্য খুব বেশী করে কাঁদ, কারণ তিনি আর কখনও ফিরে আসবেন না কিংবা তাঁর জন্মদেশও আর দেখতে পাবেন না। 11তিনি হলেন ইউসিয়ার ছেলে শল্লুম, যিনি তাঁর পিতার পরে এহুদার বাদশাহ্হয়েছিলেন কিন্তু এই জায়গা ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁর সম্বন্ধে মাবুদ বলছেন, “সে কখনও ফিরে আসবে না। 12যেখানে সে বন্দী হয়ে আছে সেই জায়গাতেই সে মারা যাবে; সে এই দেশ আর দেখতে পাবে না।”
বাদশাহ্যিহোয়াকীম সম্বন্ধে হযরত ইয়ারমিয়া (আঃ)-এর কথা
13মাবুদ বলছেন, “ঘৃণ্য সে, যে লোক তার বাড়ী অন্যায় দিয়ে তৈরী করে আর অবিচার দিয়ে তার উপরের তলার কামরাগুলো তৈরী করে। ঘৃণ্য সে, যে লোক কোন কিছু না দিয়ে তার দেশের লোকদের খাটায় এবং তাদের পরিশ্রমের মজুরী দেয় না। 14ঘৃণ্য সে, যে লোক বলে, ‘আমি নিজের জন্য একটা বড় বাড়ী তৈরী করব যার উপরের তলায় থাকবে বড় বড় কামরা। আমি তার মধ্যে বড় বড় জানালা বসাব এবং তার তক্তাগুলো এরস কাঠ দিয়ে তৈরী করব আর তা লাল রং দিয়ে সাজাব।’ 15অনেক অনেক এরস গাছ থাকলেই কি তা তোমাকে বাদশাহ্বানাবে? তোমার পিতা যদিও ভালভাবেই খাওয়া-দাওয়া করত তবুও যা ঠিক ও ন্যায্য সে তা করত বলে তার সময়ে সব কিছু ভাল চলেছিল। 16সে দুঃখী ও অভাবীদের পক্ষ নিত বলে সব কিছু ভাল চলেছিল। মাবুদকে জানা মানেই ঐ সব কাজ করা। 17কিন্তু তোমার চোখ ও মন রয়েছে কেবল অন্যায় লাভ, নির্দোষের রক্তপাত এবং অত্যাচার ও জুলুম করবার উপর।”
18কাজেই এহুদার বাদশাহ্ইউসিয়ার ছেলে যিহোয়াকীমের বিষয়ে মাবুদ বলছেন, “লোকে তার জন্য একে অন্যের কাছে ‘হায় হায়’ বলে বিলাপ করবে না। তারা তার জন্য ‘হায় হুজুর! হায় তাঁর জাঁকজমক!’ বলেও বিলাপ করবে না। 19গাধাকে যেমন করে কবর দেওয়া হয় তেমনি করে তাকে দাফন করা হবে; তাকে টেনে জেরুজালেমের দরজার বাইরে ফেলে দেওয়া হবে।”
জেরুজালেমের শাস্তি
20মাবুদ বলছেন, “হে জেরুজালেম, তুমি লেবাননে গিয়ে চিৎকার কর, তোমার গলার আওয়াজ বাশনে শোনা যাক। তুমি অবারীম থেকে চিৎকার কর, কারণ তোমার সব প্রেমিকেরা চুরমার হয়ে গেছে। 21তুমি যখন ভাল অবস্থায় ছিলে তখন আমি তোমাকে সাবধান করেছিলাম, কিন্তু তুমি বলেছিলে, ‘আমি শুনব না।’ প্রথম থেকেই তোমার ব্যবহার এই রকম; তুমি আমার বাধ্য হও নি। 22বাতাস তোমার সব রাখালদের তাড়িয়ে নিয়ে যাবে আর তোমার প্রেমিকেরা বন্দী হয়ে দূরে যাবে। তখন তুমি তোমার সব দুষ্টতার জন্য লজ্জিত ও অপমানিত হবে। 23হে লেবাননের এরস কাঠের তৈরী বাড়ীতে বাসকারিণী, স্ত্রীলোকের প্রসব ব্যথার মত যন্ত্রণা যখন তোমার উপর আসবে তখন তুমি ভীষণ কাত্রাবে!”
বাদশাহ্যিহোয়াখীনের শাস্তি
24মাবুদ বলছেন, “হে এহুদার বাদশাহ্যিহোয়াকীমের ছেলে যিহোয়াখীন, আমার জীবনের কসম, তুমি যদি আমার ডান হাতের সীলমোহরের আংটি হতে তবুও আমি তোমাকে খুলে ফেলে দিতাম। 25যারা তোমার প্রাণ নিতে চায়, যাদের তুমি ভয় পাও সেই ব্যাবিলনের বাদশাহ্বখতে-নাসার ও ব্যাবিলনীয়দের হাতে আমি তোমাকে তুলে দেব। 26আমি তোমাকে ও তোমাকে যে জন্ম দিয়েছে তোমার সেই মাকে অন্য দেশে, যেখানে তোমাদের কারও জন্ম হয় নি সেই দেশে ছুঁড়ে ফেলে দেব, আর তোমরা দু’জনে সেখানে মারা যাবে। 27তোমরা যে দেশে ফিরে আসতে চাইবে সেখানে কখনও ফিরে আসতে পারবে না।”
28এই যিহোয়াখীন কি এমন একটা তুচ্ছ ভাংগা পাত্র যাঁকে কেউ চায় না? কেন তাঁকে ও তাঁর সন্তানদের তাঁদের অজানা একটা দেশে ছুঁড়ে ফেলা হবে? 29হে দেশ, দেশ, দেশ, মাবুদের কালাম শোন। 30মাবুদ বলছেন, “তুমি লেখ, এই লোকটির যেন কোন ছেলেমেয়ে নেই। সে তার জীবনকালে সফল হতে পারবে না আর তার কোন সন্তানও সফল হবে না। তাদের কেউ দাউদের সিংহাসনে বসবে না কিংবা এহুদা দেশের উপর রাজত্ব করবে না।”