ইয়ারমিয়া 42
লোকদের জন্য হযরত ইয়ারমিয়া (আঃ)-এর মুনাজাত
1-2 তারপর সৈন্যদলের সব সেনাপতিরা, কারেহের ছেলে যোহানন ও হোশয়িয়ের ছেলে যাসনিয় আর সমস্ত লোকেরা এসে নবী ইয়ারমিয়াকে বলল, “দয়া করে আপনি আমাদের মিনতি শুনুন এবং এই বাকী লোকদের জন্য আপনি আপনার মাবুদ আল্লাহ্র কাছে মুনাজাত করুন। আপনি তো এখন দেখতেই পাচ্ছেন যদিও এক সময় আমরা অনেকজন ছিলাম এখন কেবল মাত্র কয়েকজন পড়ে রয়েছি। 3আপনার মাবুদ আল্লাহ্র কাছে মুনাজাত করুন যাতে তিনি আমাদের বলে দেন আমরা কোথায় যাব আর কি করব।”
4জবাবে নবী ইয়ারমিয়া বললেন, “আমি আপনাদের কথা শুনেছি। আমি আপনাদের অনুরোধ অনুসারে আপনাদের মাবুদ আল্লাহ্র কাছে নিশ্চয়ই মুনাজাত করব। মাবুদ যা বলবেন তা সবই আপনাদের বলব, কিছুই আপনাদের কাছ থেকে গোপন করব না।”
5তখন তারা ইয়ারমিয়াকে বলল, “আপনার মাবুদ আল্লাহ্আমাদের যা বলবার জন্য আপনাকে পাঠাবেন সেইমত যদি আমরা সব কিছু না করি তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে মাবুদই যেন একজন সত্যিকার বিশ্বস্ত সাক্ষী হন। 6আমরা যাঁর কাছে আপনাকে পাঠাচ্ছি আমরা আমাদের সেই মাবুদ আল্লাহ্র কথার বাধ্য হব-তা আমাদের পছন্দমত হোক বা না হোক। যদি আমরা আমাদের মাবুদ আল্লাহ্র বাধ্য হই তবে আমাদের ভাল হবে।”
7এর দশ দিন পরে ইয়ারমিয়ার উপর মাবুদের কালাম নাজেল হল। 8তখন তিনি যোহাননকে ও তার সংগের সৈন্যদলের সব সেনাপতিদের এবং সমস্ত লোকদের ডেকে একত্র করলেন। 9তিনি তাদের বললেন, “আপনারা আপনাদের মিনতি জানাবার জন্য যাঁর কাছে আমাকে পাঠিয়েছিলেন সেই ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্বলছেন, 10‘তোমরা যদি দেশে থাক তবে আমি তোমাদের গড়ে তুলব, ভেংগে ফেলব না; আমি তোমাদের লাগিয়ে দেব, উপ্ড়ে ফেলব না, কারণ তোমাদের উপরে যে বিপদ এনেছি তার জন্য আমি মনে ব্যথা পেয়েছি। 11যাকে তোমরা ভয় করছ সেই ব্যাবিলনের বাদশাহ্কে তোমরা ভয় কোরো না, কারণ আমি তোমাদের সংগে সংগে আছি। আমি তোমাদের রক্ষা করব এবং তার হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করব। 12আমি তোমাদের প্রতি মমতা করব, তাতে সে-ও তোমাদের প্রতি মমতা করবে এবং তোমাদের নিজেদের জায়গায় আবার তোমাদের ফিরিয়ে আনবে।’
13“কিন্তু যদি আপনারা বলেন, ‘আমরা দেশে থাকব না’ এবং এইভাবে আপনাদের মাবুদ আল্লাহ্র কথা অমান্য করেন, 14আর যদি আপনারা বলেন, ‘আমরা গিয়ে মিসরে বাস করব; সেখানে আমরা যুদ্ধও দেখব না, শিংগার আওয়াজও শুনব না, খাবারের অভাবে খিদেও বোধ করব না,’ 15তাহলে এহুদার বাদবাকী লোকেরা মাবুদের কালাম শুনুন। ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্রাব্বুল আলামীন বলছেন, ‘তোমরা যদি মিসরে যাওয়াই ঠিক করে থাক আর সেখানে গিয়ে বাস কর, 16তবে যে যুদ্ধকে তোমরা ভয় করছ তা সেখানেই তোমাদের ধরে ফেলবে এবং যে দুর্ভিক্ষের ভয় করছ তা তোমাদের পিছন পিছন মিসরে যাবে এবং সেখানেই তোমরা মারা পড়বে। 17এই কথা সত্যি যে, যারা মিসরে গিয়ে বাস করবে বলে ঠিক করেছে তারা সবাই সেখানে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ ও মহামারীতে মারা পড়বে; যে বিপদ আমি তাদের উপর আনব তা থেকে তাদের একজনও বেঁচে থাকতে পারবে না কিংবা তা এড়াতেও পারবে না।’ 18ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্রাব্বুল আলামীন বলছেন, ‘যারা জেরুজালেমে বাস করত তাদের উপরে যেমন করে আমার ভীষণ রাগ ও গজব ঢেলে পড়েছে তোমরা মিসরে গেলে তেমনি করে আমার গজব তোমাদের উপরেও ঢেলে পড়বে। তোমরা হবে ঠাট্টা-বিদ্রুপ ও ঘৃণার পাত্র; তোমাদের অবস্থা দেখে লোকে হতভম্ব হবে আর তোমাদের নাম নিয়ে লোকে বদদোয়া দেবে। তোমরা আর কখনও এই জায়গা দেখতে পাবে না।’
19“হে এহুদার বাদবাকী লোকেরা, মাবুদ তো আপনাদের বলেছেন, ‘তোমরা মিসরে যেয়ো না।’ আপনারা জেনে রাখুন আমি আজ আপনাদের সাবধান করছি যে, 20আপনারা মারাত্মক ভুল করতে যাচ্ছেন। আপনারা আমাকে আপনাদের মাবুদ আল্লাহ্র কাছে এই বলে পাঠিয়েছিলেন, ‘আপনি আমাদের জন্য আমাদের মাবুদ আল্লাহ্র কাছে মুনাজাত করুন; তিনি যা বলবেন তা সবই আপনি আমাদের বলবেন আর আমরা তা করব।’ 21আমি আজ তা আপনাদের বললাম কিন্তু যে সব বিষয় বলবার জন্য আপনাদের মাবুদ আল্লাহ্আমাকে আপনাদের কাছে পাঠিয়েছেন তা আপনারা এখনও পালন করেন নি। 22কাজেই এখন আপনারা জেনে রাখুন যে, আপনারা যে জায়গায় গিয়ে বাস করতে চান সেখানে আপনারা যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ ও মহামারীতে মারা পড়বেন।”