শুমারী 16
গুনাহ্ঢাকা দেবার ঈদ
1হারুনের দুই ছেলে অন্যায়ভাবে মাবুদের সামনে উপস্থিত হয়ে মারা যাবার পরে মাবুদ মূসার সংগে কথা বললেন। 2তিনি বললেন, “তোমার ভাই হারুনকে বল, সাক্ষ্য-সিন্দুকের উপরকার ঢাকনার সামনে যে পর্দা রয়েছে তার পিছনে সেই পবিত্র জায়গায় সে যেন তার খুশীমত যখন-তখন না যায়। তা করলে সে মারা যাবে, কারণ সেই ঢাকনার উপরে মেঘের মধ্যে আমি প্রকাশিত থাকি।
3“সেখানে ঢুকবার আগে সে যেন নিজেকে এইভাবে তৈরী করে নেয়। তাকে গুনাহের কোরবানীর জন্য একটা ষাঁড় ও পোড়ানো-কোরবানীর জন্য একটা ভেড়া নিতে হবে। 4তার পরনে থাকবে পবিত্র মসীনার আলখাল্লা আর নীচে থাকবে মসীনার তৈরী জাংগিয়া। তাকে মসীনার কোমর-বাঁধনি কোমরে বাঁধতে হবে আর মাথায় দিতে হবে মসীনার পাগড়ি। এগুলো পবিত্র পোশাক। তা পরবার আগে তাকে পানিতে গোসল করে নিতে হবে। 5গুনাহের কোরবানীর জন্য বনি-ইসরাইলদের কাছ থেকে তাকে দু’টা ছাগল এবং পোড়ানো-কোরবানীর জন্য একটা ভেড়া নিতে হবে। 6হারুনকে তার নিজের ও তার বংশধরদের গুনাহ্ঢাকা দেবার জন্য গুনাহের কোরবানীর ষাঁড়টা কোরবানী দিতে হবে। 7তারপর সেই ছাগল দু’টা নিয়ে তাকে মিলন-তাম্বুর দরজার কাছে মাবুদের সামনে নিয়ে যেতে হবে। 8তাকে গুলিবাঁট করে দেখতে হবে যে, তার মধ্যে কোন্ছাগলটা মাবুদের জন্য আর কোন্টা আজাজীলের জন্য। 9যে ছাগলটা মাবুদের বলে দেখা যাবে হারুন সেটা নিয়ে গুনাহের কোরবানী দেবে। 10কিন্তু গুলিবাঁটে যে ছাগলটা আজাজীলের জন্য উঠবে সেটা জীবিত অবস্থাতেই মাবুদের সামনে উপস্থিত করতে হবে এবং গুনাহ্ঢাকা দেবার উদ্দেশ্যে আজাজীলের জন্য মরুভূমিতে পাঠিয়ে দিতে হবে।
11“হারুন তার নিজের ও তার বংশধরদের গুনাহ্ঢাকা দেবার উদ্দেশ্যে তার নিজের গুনাহের কোরবানীর জন্য আনা সেই ষাঁড়টা নিয়ে জবাই করবে। 12মাবুদের সামনে যে কোরবানগাহ্রয়েছে সে সেই কোরবানগাহ্থেকে আগুনের পাত্রে জ্বলন্ত কয়লা ভরে নেবে আর মিহি করে গুঁড়ো করা দু’মুঠো খোশবু ধূপও নেবে। এগুলো নিয়ে সে পর্দার পিছনে যাবে। 13সেখানে মাবুদের সামনে সে আগুনের উপরে ধূপ দেবে। সেই ধূপের ধোঁয়ায় সাক্ষ্য-সিন্দুকের উপরের ঢাকনাটা ঢাকা পড়ে যাবে আর তাতে সে মারা পড়বে না। 14তারপর তাকে সেই ষাঁড়ের কিছুটা রক্ত নিয়ে আংগুল দিয়ে ঢাকনাটার সামনের দিকের কিনারায় তা ছিটিয়ে দিতে হবে। এর পর আংগুল দিয়ে তাকে আরও কিছুটা রক্ত নিয়ে ঢাকনার সামনে সাতবার ছিটিয়ে দিতে হবে।
15“তারপর তাকে লোকদের গুনাহের কোরবানীর ছাগলটা জবাই করতে হবে এবং তার রক্ত নিয়ে পর্দার পিছনে গিয়ে ষাঁড়ের রক্ত দিয়ে যা করবার কথা বলা হয়েছে তা-ই করতে হবে। সিন্দুকের ঢাকনার উপরে ও সামনে সেই রক্ত তাকে ছিটিয়ে দিতে হবে। 16বনি-ইসরাইলরা যে গুনাহ্ই করে থাকুক না কেন, তাদের সেই নাপাকী এবং অবাধ্যতার দরুন মহাপবিত্র স্থানের নাপাকী হারুন এইভাবেই ঢাকা দেবার ব্যবস্থা করবে। বনি-ইসরাইলদের নাপাকীর মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা মিলন-তাম্বুর জন্যও তাকে সেই একই ব্যবস্থা করতে হবে। 17মহাপবিত্র স্থানে ঢুকে যতক্ষণ পর্যন্ত হারুন তার নিজের ও তার বংশধরদের এবং গোটা ইসরাইল জাতির গুনাহ্ঢাকা দেবার কাজ শেষ করে বের হয়ে না আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ মিলন-তাম্বুতে থাকতে পারবে না। 18মিলন-তাম্বু থেকে বের হয়ে এসে হারুন মাবুদের সামনে যে কোরবানগাহ্রয়েছে সেখানে গিয়ে কোরবানগাহ্টার নাপাকী ঢাকা দেবে। সেই ষাঁড় ও ছাগলটার কিছু রক্ত নিয়ে সে তা কোরবানগাহের শিংগুলোতে লাগিয়ে দেবে। 19কোরবানগাহ্টি পাক-সাফ করবার জন্য এবং সেটা বনি-ইসরাইলদের নাপাকী থেকে পাক-পবিত্র করবার জন্য সে আংগুল দিয়ে তার উপর সাতবার রক্ত ছিটিয়ে দেবে।
20“মহাপবিত্র স্থান, মিলন-তাম্বু এবং কোরবানগাহের নাপাকী ঢাকা দেবার কাজ শেষ করে হারুন সেই জীবিত ছাগলটা নিয়ে আসবে। 21সে তার দুই হাত সেই জীবিত ছাগলটার মাথার উপর রাখবে এবং বনি-ইসরাইলদের সমস্ত অন্যায় ও অবাধ্যতা, অর্থাৎ তাদের সমস্ত গুনাহ্স্বীকার করে তা ছাগলটার মাথার উপর চাপিয়ে দেবে। তারপর এই কাজের জন্য তৈরী হয়ে আছে এমন একজন লোককে দিয়ে সে সেটা মরুভূমিতে পাঠিয়ে দেবে। 22সেই লোকটিই সেটাকে মরুভূমিতে ছেড়ে দিয়ে আসবে। ছাগলটা কোন নির্জন জায়গায় তাদের সমস্ত অন্যায় বয়ে বেড়াবে।
23“মহাপবিত্র স্থানে ঢুকবার আগে হারুন যে সব মসীনার কাপড় পরবে মিলন-তাম্বুতে ফিরে এসে সেগুলো তাকে খুলে সেখানেই রেখে দিতে হবে। 24তারপর সে পবিত্র তাম্বু-ঘরের এলাকায় গিয়ে পানিতে গোসল করে ইমামের নিয়মিত কাপড়-চোপড় পরবে। এর পর সে বের হয়ে এসে তার নিজের ও লোকদের জন্য একটা করে পোড়ানো-কোরবানী দিয়ে তার নিজের ও লোকদের গুনাহ্ঢাকা দেবার ব্যবস্থা করবে। 25গুনাহের কোরবানীর পশুর চর্বি তাকে কোরবানগাহের উপর পুড়িয়ে দিতে হবে। 26যে লোকটি আজাজীলের জন্য ছাগলটাকে ছেড়ে দিয়ে আসবে তাকে তার কাপড়-চোপড় ধুয়ে পানিতে গোসল করে ফেলতে হবে, আর তারপর সে ছাউনির মধ্যে ঢুকতে পারবে। 27গুনাহ্ঢাকা দেবার জন্য গুনাহের কোরবানীর যে ষাঁড় ও ছাগলের রক্ত মহাপবিত্র স্থানে নিয়ে যাবার কথা বলা হয়েছে সেগুলোর দেহ ছাউনির বাইরে নিয়ে গিয়ে চামড়া, গোশ্ত এবং গোবর সুদ্ধ সব কিছু পুড়িয়ে দিতে হবে। 28যে লোকটি তা পোড়াবার জন্য নিয়ে যাবে তাকে তার কাপড়-চোপড় ধুয়ে পানিতে গোসল করে ফেলতে হবে আর তার পরে সে ছাউনির মধ্যে ঢুকতে পারবে।
29“এর পর যা বলছি তা তোমাদের জন্য একটা স্থায়ী নিয়ম হয়ে থাকবে। বছরের সপ্তম মাসের দশম দিনের দিন তোমরা প্রত্যেকে নিজের অন্তর ভেংগেচুরে কষ্টস্বীকার করবে। সেই দিন কোন কাজ করা চলবে না। ইসরাইলীয়ই হোক কিংবা বনি-ইসরাইলদের মধ্যে বাস করা অন্য জাতির লোকই হোক, সকলকেই তা মানতে হবে, 30কারণ এই দিনেই তোমাদের গুনাহ্ঢাকা দেবার কাজ করে তোমাদের পাক-সাফ করে নেওয়া হবে, আর তার পরে তোমরা মাবুদের সামনে তোমাদের সমস্ত গুনাহ্থেকে পাক-সাফ হবে। 31এই দিনটা হবে তোমাদের কাজ থেকে বিশ্রামের দিন। এই দিনে তোমরা প্রত্যেকে নিজের অন্তর ভেংগেচুরে কষ্টস্বীকার করবে। এটা হবে একটা স্থায়ী নিয়ম। 32-33 যখন যে ইমামকে মহা-ইমাম হিসাবে অভিষেক করে তার পিতার পদে বহাল করা হবে তখন সে-ই এই গুনাহ্ঢাকা দেবার কাজ করবে। তাকে সেই পবিত্র মসীনার পোশাক পরে মহাপবিত্র স্থানের, মিলন-তাম্বুর, কোরবানগাহের, ইমামের এবং গোটা ইসরাইল জাতির নাপাকী ও গুনাহ্ঢাকা দেবার ব্যবস্থা করতে হবে।
34“এটা হবে তোমাদের জন্য একটা স্থায়ী নিয়ম। বছরে একবার করে বনি-ইসরাইলদের সব গুনাহের জন্য এই গুনাহ্ঢাকা দেবার কাজ করতে হবে।”
মূসাকে দেওয়া মাবুদের হুকুম মতই সব কিছু করা হয়েছিল।