Luke 23:1-25
লূক 23
পীলাতের সামনে হযরত ঈসা মসীহের বিচার
1তখন সেই সভার সকলে উঠে ঈসাকে রোমীয় প্রধান শাসনকর্তা পীলাতের কাছে নিয়ে গেলেন।
2তাঁরা এই বলে ঈসার বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে লাগলেন, “আমরা দেখেছি, এই লোকটা সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের লোকদের নিয়ে যাচ্ছে। সে সম্রাটকে খাজনা দিতে নিষেধ করে এবং বলে সে নিজেই মসীহ্, একজন বাদশাহ্।”
3পীলাত ঈসাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি ইহুদীদের বাদশাহ্?”
ঈসা বললেন, “আপনি ঠিক কথাই বলছেন।”
4তখন পীলাত প্রধান ইমামদের ও সমস্ত লোকদের বললেন, “আমি তো এই লোকটির কোন দোষই দেখতে পাচ্ছি না।”
5কিন্তু তাঁরা জিদ করে বলতে লাগলেন, “এহুদিয়া প্রদেশের সব জায়গায় শিক্ষা দিয়ে এ লোকদের ক্ষেপিয়ে তুলছে। গালীল প্রদেশ থেকে সে শুরু করেছে, আর এখন এখানে এসেছে।”
6এই কথা শুনে পীলাত জিজ্ঞাসা করলেন ঈসা গালীল প্রদেশের লোক কি না।
7শাসনকর্তা হেরোদের শাসনের অধীনে যে প্রদেশ আছে, ঈসা সেই জায়গার লোক জানতে পেরে পীলাত তাঁকে হেরোদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। সেই সময় হেরোদও জেরুজালেমে ছিলেন।
8ঈসাকে দেখে হেরোদ খুব খুশী হলেন। তিনি ঈসার সম্বন্ধে অনেক কথা শুনেছিলেন, তাই তিনি অনেক দিন ধরে তাঁকে দেখতে চাইছিলেন। হেরোদ আশা করেছিলেন ঈসা তাঁকে কোন অলৌকিক কাজ করে দেখাবেন।
9তিনি ঈসাকে অনেক প্রশ্ন করলেন, কিন্তু ঈসা কোন কথারই জবাব দিলেন না।
10প্রধান ইমামেরা এবং আলেমেরা সেখানে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে ঈসাকে দোষ দিতে লাগলেন।
11তখন হেরোদ ঈসাকে অপমান ও ঠাট্টা করলেন, আর তাঁর সৈন্যেরাও তা-ই করল। তার পরে ঈসাকে জমকালো একটা পোশাক পরিয়ে তিনি তাঁকে পীলাতের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
12এর আগে হেরোদ ও পীলাতের মধ্যে শত্রুতা ছিল, কিন্তু সেই দিন থেকে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব হল।
13পীলাত তখন প্রধান ইমামদের, নেতাদের এবং সাধারণ লোকদের ডেকে একত্র করে বললেন,
14“আপনারা এই লোকটিকে এই দোষ দিয়ে আমার কাছে এনেছেন যে, লোকদের সে সরকারের বিরুদ্ধে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাকে আমি আপনাদের সামনেই জেরা করেছি। আপনারা তার বিরুদ্ধে যে সব দোষ দিচ্ছেন তার একটাতেও সে দোষী বলে আমি প্রমাণ পাই নি।
15হেরোদও নিশ্চয় তার কোন দোষ পান নি, কারণ তিনি তাকে আমাদের কাছে ফেরৎ পাঠিয়েছেন। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, হত্যা করবার মত এমন কোন অন্যায় কাজও সে করে নি।
16তাই আমি তাকে শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেব।”
17তিনি এই কথা বললেন কারণ উদ্ধার-ঈদের সময়ে প্রত্যেক বারই তাঁকে একজন কয়েদীকে ছেড়ে দিতে হত।
18কিন্তু লোকেরা একসংগে চেঁচিয়ে বলতে লাগল, “ওকে দূর করুন, বারাব্বাকে আমাদের কাছে ছেড়ে দিন।”
19এই বারাব্বাকে শহরের মধ্যে বিদ্রোহ ও খুনাখুনির জন্য জেলে দেওয়া হয়েছিল।
20পীলাত কিন্তু ঈসাকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন, সেইজন্য তিনি লোকদের আবার সেই একই কথা বললেন।
21কিন্তু লোকেরা এই বলে চেঁচাতেই থাকল, “ওকে ক্রুশে দিন, ক্রুশে দিন।”
22পীলাত তৃতীয়বার লোকদের বললেন, “কেন, এই লোকটি কি দোষ করেছে? আমি তো তার কোন দোষই দেখতে পাচ্ছি না যাতে তাকে মৃত্যুর শাস্তি দেওয়া যায়। সেইজন্য তাকে আমি অন্য শাস্তি দেবার পর ছেড়ে দেব।”
23কিন্তু লোকেরা ঈসাকে ক্রুশের উপরে হত্যা করবার জন্য চিৎকার করতে থাকল এবং শেষে তারা চেঁচিয়েই জয়ী হল। পীলাত লোকদের কথা মেনে নেওয়া ঠিক করলেন।
24-25বিদ্রোহ ও খুনের জন্য যাকে জেলে দেওয়া হয়েছিল লোকেরা তাকেই চেয়েছিল; সেইজন্য পীলাত সেই লোককে ছেড়ে দিলেন এবং লোকদের ইচ্ছামত ঈসাকে হত্যা করবার জন্য তাদের হাতে দিলেন।