শুমারী 15
আরও কয়েকটি কোরবানী
1-5 মাবুদ মূসাকে বনি-ইসরাইলদের এই কথা বলতে বললেন, “যে দেশটা আমি তোমাদের নিজের দেশ হিসাবে দিচ্ছি সেখানে যাবার পরে আমাকে খুশী করবার খোশবুর জন্য তোমরা পাল থেকে গরু, ভেড়া বা ছাগল নিয়ে এসে আমার উদ্দেশে আগুনে দেওয়া-কোরবানী দেবে। কোরবানীর প্রত্যেকটি পশুর সংগে থাকবে শস্য-কোরবানী এবং ঢালন-কোরবানী- সেটা পোড়ানো-কোরবানীই হোক, কিংবা বিশেষ মানত পূরণের কোরবানীই হোক, কিংবা নিজের ইচ্ছায় করা কোরবানীই হোক, কিংবা কোন ঈদের কোরবানীই হোক। কোরবানীর পশুটা বাচ্চা-ভেড়া হলে তার সংগে শস্য-কোরবানীর জন্য তেল মিশানো মিহি ময়দা আনতে হবে। ময়দার পরিমাণ হবে এক কেজি আটশো গ্রাম আর তেলের পরিমাণ হবে প্রায় এক লিটার। ঢালন-কোরবানীর জন্য আনতে হবে প্রায় এক লিটার আংগুর-রস। 6পশুটা ভেড়া হলে তার সংগে শস্য-কোরবানীর জন্য তেল মিশানো মিহি ময়দা আনতে হবে। ময়দার পরিমাণ হবে তিন কেজি ছ’শো গ্রাম আর তেলের পরিমাণ হবে সোয়া লিটার। 7ঢালন-কোরবানীর জন্য আনতে হবে সোয়া লিটার আংগুর-রস। তারপর মাবুদকে খুশী করবার গন্ধের জন্য তা মাবুদের কাছে কোরবানী করতে হবে। 8যদি তোমরা পোড়ানো-কোরবানী কিংবা বিশেষ মানত পূরণের কোরবানী কিংবা যোগাযোগ-কোরবানীর জন্য আমার কাছে কোন গরু নিয়ে আস, 9তবে তার সংগে শস্য-কোরবানীর জন্য তেল মিশানো মিহি ময়দা আনতে হবে। ময়দার পরিমাণ হবে পাঁচ কেজি চারশো গ্রাম আর তেলের পরিমাণ হবে পৌনে দুই লিটার। 10এর সংগে ঢালন-কোরবানীর জন্য পৌনে দুই লিটার আংগুর-রসও আনতে হবে। এটা একটা আগুনে দেওয়া-কোরবানী যার খোশবুতে আমি খুশী হই।
11“প্রত্যেকটা ষাঁড় কিংবা ভেড়া, প্রত্যেকটা বাচ্চা-ভেড়া কিংবা ছাগল এইভাবে কোরবানী দিতে হবে। 12তোমরা যত পশুই কোরবানী দাও না কেন প্রত্যেকটা পশু এই নিয়মে কোরবানী দিতে হবে। 13মাবুদকে খুশী করবার খোশবুর জন্য আগুনে দেওয়া-কোরবানী দেওয়ার সময় প্রত্যেক ইসরাইলীয়কে এই নিয়মে কোরবানী দিতে হবে। 14অন্য জাতির কোন লোক কিংবা তোমাদের মধ্যে বাস করা অন্য কেউ যদি মাবুদকে খুশী করবার খোশবুর জন্য আগুনে দেওয়া-কোরবানী দেয় তবে তাকে ঠিক তোমাদের মতই সমস্ত কিছু করতে হবে। বংশের পর বংশ ধরে এই নিয়ম চলবে। 15তোমাদের সমাজে সকলের জন্য একই নিয়ম চালু থাকবে- সে তোমরাই হও কিংবা তোমাদের মধ্যে বাস করা ভিন্ন জাতির লোকই হোক। বংশের পর বংশ ধরে তা হবে একটা স্থায়ী নিয়ম। এই ব্যাপারে আমার কাছে তোমরাও যা ভিন্ন জাতির লোকেরাও তা। 16তোমাদের জন্য এবং তোমাদের মধ্যে বাস করা ভিন্ন জাতির লোকদের জন্য একই নির্দেশ ও একই শরীয়ত চলবে।”
17-19 এর পর মাবুদ মূসাকে বনি-ইসরাইলদের এই কথা বলতে বললেন, “আমি তোমাদের যে দেশে নিয়ে যাচ্ছি সেখানে গিয়ে যখন তোমরা দেশের ফসল ভোগ করবে তখন সেই ফসলের একটা অংশ তোমরা আমার কাছে কোরবানী করবে। 20প্রথমে তোলা শস্যের ময়দা ঠেসে নিয়ে তা দিয়ে একখানা পিঠা তৈরী করে খামার-বাড়ীর দান হিসাবে তা কোরবানী করতে হবে। 21প্রথমে তোলা শস্যের এই কোরবানী বংশের পর বংশ ধরে আমার উদ্দেশে তোমাদের করতে হবে।
ভুল করে অন্যায় করা
22-24 “যদি কোন ভুলের দরুন তোমরা সবাই মূসার মধ্য দিয়ে দেওয়া মাবুদের এই সব হুকুমের কোনটা পালন না কর এবং সেই হুকুম দেওয়ার দিন থেকে শুরু করে যদি বংশের পর বংশ ধরে সেই ভুল তোমাদের হতেই থাকে আর সেই ভুল যদি সকলের অজানা থেকে যায়, তবে তা জানবার পরে মাবুদকে খুশী করবার খোশবুর জন্য গোটা ইসরাইল জাতিকে একটা ষাঁড় দিয়ে পোড়ানো-কোরবানী দিতে হবে। সেই সংগে তার নিয়মিত শস্য-কোরবানী এবং ঢালন-কোরবানী করতে হবে আর গুনাহের কোরবানী হিসাবে একটা ছাগলও কোরবানী দিতে হবে। 25ইমামকে গোটা ইসরাইল জাতির সেই অন্যায় ঢাকা দেবার ব্যবস্থা করতে হবে। তাতে তাদের মাফ করা হবে, কারণ তারা ইচ্ছা করে তা করে নি এবং তাদের ভুলের জন্য তারা মাবুদের উদ্দেশে আগুনে দেওয়া-কোরবানী এবং গুনাহের কোরবানীর ব্যবস্থা করেছে। 26এতে গোটা ইসরাইল জাতিকে এবং তার মধ্যে বাস করা ভিন্ন জাতির লোকদের মাফ করা হবে, কারণ এই ভুলের মধ্যে তারা সবাই জড়িত ছিল।
27“কিন্তু যদি মাত্র একজন লোক ভুল করে কোন অন্যায় করে ফেলে তবে গুনাহের কোরবানীর জন্য তাকে এক বছরের একটা ছাগী আনতে হবে। 28ভুল করে যে লোক এইভাবে অন্যায় করবে ইমামকে মাবুদের সামনে সেই লোকটির অন্যায় ঢাকা দেবার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই অন্যায় ঢাকা দেওয়া হলে পর তাকে মাফ করা হবে। 29ভুল করে অন্যায় করে ফেলেছে এমন প্রত্যেকটি লোকের জন্য এই একই নিয়ম খাটবে- সেই লোক ইসরাইলীয়ই হোক কিংবা অন্য জাতির লোকই হোক।
30“কিন্তু ইসরাইলীয় কিংবা তাদের মধ্যে বাস করা অন্য জাতির লোকদের মধ্য থেকে যদি কেউ ইচ্ছা করে অন্যায় করে তবে সে মাবুদকে অপমান করে। তাকে তার জাতির মধ্য থেকে মুছে ফেলতে হবে। 31মাবুদের কথা তুচ্ছ করবার এবং তাঁর হুকুম অমান্য করবার দরুন তাকে অবশ্যই মুছে ফেলতে হবে, আর তার দোষ তার উপরেই থেকে যাবে।”
বিশ্রামবার-অমান্যকারীর শাস্তি
32বনি-ইসরাইলরা মরুভূমিতে থাকবার সময় একজন লোককে বিশ্রামবারে কাঠ কুড়াতে দেখা গেল। 33যারা তাকে কাঠ কুড়াতে দেখল তারা তাকে মূসা, হারুন এবং সমস্ত বনি-ইসরাইলদের কাছে নিয়ে গেল। 34এই রকম লোককে নিয়ে কি করতে হবে তা বলা হয় নি বলে তাঁরা তাকে আটক করে রাখলেন। 35তখন মাবুদ মূসাকে বললেন, “লোকটাকে হত্যা করতে হবে। ছাউনির বাইরে নিয়ে গিয়ে সমস্ত বনি-ইসরাইল তাকে পাথর মারবে।” 36কাজেই বনি-ইসরাইলরা মূসার মধ্য দিয়ে দেওয়া মাবুদের হুকুম মত তাকে ছাউনির বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করল।
চাদরের থোপ্না
37-38 তারপর মাবুদ মূসাকে বনি-ইসরাইলদের এই কথা বলতে বললেন, “তোমরা তোমাদের গায়ের চাদরের কোণায় থোপ্না লাগাবে এবং প্রত্যেকটা থোপ্না নীল সুতা দিয়ে কাপড়ের সংগে বেঁধে দেবে। এটা তোমাদের বংশের পর বংশ ধরে করতে হবে। 39সেই থোপ্নাগুলো বাঁধবে যেন সেগুলোর দিকে চোখ পড়লে আমার সমস্ত হুকুমের কথা তোমাদের মনে পড়ে এবং তোমরা তা মেনে চল। তাহলে তোমরা আমার প্রতি বেঈমানী করে তোমাদের অন্তরের আর চোখের কামনার কাছে নিজেদের তুলে দেবে না। 40তখন আমার সমস্ত হুকুম পালন করবার কথা তোমাদের মনে থাকবে এবং তোমাদের আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে তোমরা পাক-পবিত্র বান্দা হয়ে থাকবে। 41আমি তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্। তোমাদের আল্লাহ্হওয়ার জন্য আমিই মিসর দেশ থেকে তোমাদের বের করে এনেছি। আমিই মাবুদ তোমাদের আল্লাহ্।”