শুমারী 35

লেবীয়দের গ্রাম ও শহর

1-2 জেরিকোর সামনে জর্ডান নদীর ধারে মোয়াবের সমভূমিতে মাবুদ মূসার মধ্য দিয়ে বনি-ইসরাইলদের হুকুম দিলেন, “সম্পত্তি পাবার পরে তোমরা তা থেকে লেবীয়দের বাস করবার জন্য কতগুলো গ্রাম ও শহর দেবে, আর তার সংগে তার চারপাশের পশু চরাবার মাঠও দেবে। 3এতে লেবীয়রা বাস করবার জন্য গ্রাম ও শহর পাবে আর তাদের গরু-ভেড়া-ছাগল ও অন্যান্য পশু চরাবার মাঠও পাবে।

4“যে সব গ্রাম ও শহর তোমরা লেবীয়দের দেবে তার চারপাশের পশু চরাবার মাঠের জায়গাগুলো যেন গ্রাম বা শহরের দেওয়াল থেকে এক হাজার হাত পর্যন্ত হয়। 5প্রত্যেকটা গ্রাম বা শহর মাঝখানে রেখে তার বাইরে উত্তর ও দক্ষিণে দু’হাজার এবং পূর্ব ও পশ্চিমে দু’হাজার হাত মেপে দেবে। এই সব জায়গাগুলো তারা তাদের গ্রাম বা শহরের পশু চরাবার মাঠ হিসাবে পাবে।

আশ্রয়-শহর

6“তোমরা যে সব গ্রাম ও শহর লেবীয়দের দেবে তার মধ্যে ছয়টা হবে আশ্রয়-শহর। কেউ কাউকে হত্যা করলে ঐ সমস্ত আশ্রয়-শহরের কোন একটাতে সে পালিয়ে যেতে পারবে। এগুলো ছাড়া তোমরা তাদের আরও বেয়াল্লিশটা গ্রাম দেবে। 7মোট আটচল্লিশটা গ্রাম ও শহর লেবীয়দের দিতে হবে এবং তার প্রত্যেকটার চারপাশে পশু চরাবার মাঠ থাকবে। 8বনি-ইসরাইলদের সম্পত্তি থেকে লেবীয়দের যে সব গ্রাম ও শহর দেওয়া হবে তা প্রত্যেক গোষ্ঠীর পাওয়া সম্পত্তির পরিমাণ বুঝে দিতে হবে। যে গোষ্ঠীর ভাগে বেশী গ্রাম ও শহর পড়বে সেই গোষ্ঠী থেকে বেশী এবং যে গোষ্ঠীর ভাগে কম গ্রাম ও শহর পড়বে সেই গোষ্ঠী থেকে কম নেবে।”

9-11 এর পর মাবুদ মূসাকে বনি-ইসরাইলদের বলতে বললেন, “জর্ডান নদী পার হয়ে কেনান দেশে গিয়ে তোমরা নিজেদের জন্য কতগুলো আশ্রয়-শহর ঠিক করে নেবে যেন কেউ কাউকে হঠাৎ হত্যা করলে সেখানে পালিয়ে যেতে পারে। 12যার প্রতিশোধ নেবার কথা, এগুলো হবে তার হাত থেকে রক্ষা পাবার আশ্রয়-শহর, যাতে খুনের দায়ে পড়া লোক বনি-ইসরাইলদের বিচার-সভার সামনে দাঁড়াবার আগে মারা না পড়ে। 13এই যে ছয়টা শহর তোমরা লেবীয়দের দেবে সেগুলো হবে তোমাদের আশ্রয়-শহর। 14এগুলোর তিনটা থাকবে জর্ডান নদীর পূর্ব পারে আর তিনটা থাকবে কেনান দেশের মধ্যে। 15এই ছয়টা হবে বনি-ইসরাইলদের, ইসরাইলীয় করে নেওয়া বাসিন্দাদের এবং পরদেশী বাসিন্দাদের আশ্রয়-শহর। কোন লোক হঠাৎ কাউকে হত্যা করলে সেখানে পালিয়ে যেতে পারবে।

16“কোন লোক যদি লোহার কিছু দিয়ে কাউকে আঘাত করে আর তাতে সে মারা যায় তবে সে খুনী। সেই খুনীকে হত্যা করতে হবে। 17যা দিয়ে মানুষ হত্যা করা যায় এমন কোন পাথর যদি কারও হাতে থাকে আর তা দিয়ে যদি সে কাউকে আঘাত করে আর তাতে সে মারা যায় তবে সে খুনী। সেই খুনীকে হত্যা করতে হবে। 18যা দিয়ে মানুষ হত্যা করা যায় এমন কোন কাঠের জিনিস যদি কারও হাতে থাকে আর তা দিয়ে যদি সে কাউকে আঘাত করে আর তাতে সে মারা যায় তবে সে খুনী। সেই খুনীকে হত্যা করতে হবে। 19খুন হওয়া লোকটার রক্তের প্রতিশোধ যার নেবার কথা তাকেই সেই খুনীকে হত্যা করতে হবে; দেখা পেলেই সে যেন তাকে হত্যা করে। 20-21 যদি কেউ মনে কোন হিংসা নিয়ে কাউকে ধাক্কা মারে কিংবা ইচ্ছা করে তার দিকে কিছু ছুঁড়ে মারে কিংবা শত্রুভাব মনে নিয়ে তাকে ঘুষি মারে আর এর কোনটাতে সে মারা যায়, তবে যে মেরেছে সে খুনী; তাকে হত্যা করতে হবে। খুন হওয়া লোকটার রক্তের প্রতিশোধ যার নেবার কথা, খুনীর দেখা পেলেই সে যেন তাকে হত্যা করে।

22-24 “কিন্তু মনে শত্রুভাব না থাকলেও যদি কেউ মুহূর্তের ভুলে কাউকে ধাক্কা মারে কিংবা মনে কোন খারাপ উদ্দেশ্য না থাকলেও তার দিকে কিছু ছুঁড়ে মারে কিংবা তাকে হত্যা করতে পারে এমন কোন পাথর তার উপর না দেখে ফেলে দেয় এবং এর যে কোন একটাতে যদি সে মারা যায়, তবে লোকটা তার শত্রু ছিল না বলে এবং তার ক্ষতি করবার ইচ্ছা তার ছিল না বলে এই সমস্ত নিয়ম অনুসারে বনি-ইসরাইলদের বিচার-সভার লোকেরা রক্তের প্রতিশোধ যার নেবার কথা তার এবং খুনের জন্য দায়ী লোকটির সম্বন্ধে বিচার করবে। 25বিচার-সভার লোকেরা তখন রক্তের প্রতিশোধ যার নেবার কথা তার হাত থেকে খুনের জন্য দায়ী করা লোকটাকে রক্ষা করে আবার তাকে সেই আশ্রয়-শহরে পাঠিয়ে দেবে যেখানে সে পালিয়ে গিয়েছিল। পবিত্র তেল দিয়ে অভিষেক করা মহা-ইমামের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেই লোকটাকে সেখানে থাকতে হবে। 26-27 কিন্তু লোকটি যদি সেই আশ্রয়-শহরের এলাকা পার হয়ে কখনও বাইরে আসে আর রক্তের প্রতিশোধ যার নেবার কথা সে তাকে শহরের এলাকার বাইরে পায় তবে সে তাকে হত্যা করতে পারবে, আর তাতে সে খুনের জন্য দায়ী হবে না। 28মহা-ইমামের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেই লোকটিকে আশ্রয়-শহরের ভিতরেই থাকতে হবে। কেবলমাত্র মহা-ইমামের মৃত্যুর পরেই সে নিজের জায়গাতে ফিরে আসতে পারবে। 29তোমরা দেশের মধ্যে যেখানেই বাস কর না কেন, বংশের পর বংশ ধরে তোমাদের জন্য এগুলো হল শরীয়তের কতগুলো ধারা।

30“সাক্ষীর সাক্ষ্যের উপর ভরসা করেই খুনীকে হত্যা করা চলবে। তবে কেবলমাত্র একজন সাক্ষীর সাক্ষ্যের উপর ভরসা করে কাউকে হত্যা করা চলবে না। 31মৃত্যুই যার পাওনা শাস্তি এমন কোন খুনীকে টাকা নিয়ে মুক্তি দেওয়া চলবে না। তাকে হত্যা করতেই হবে। 32আশ্রয়-শহরে পালিয়ে যাওয়া কোন লোককে টাকার বদলে মহা-ইমামের মৃত্যুর আগে তার জায়গা-জমিতে ফিরে গিয়ে বাস করতে দেওয়া চলবে না। 33তোমরা তোমাদের দেশকে নাপাক করবে না, কারণ রক্তপাত হলে দেশ নাপাক হয়। যে দেশে রক্তপাত হয়েছে রক্তপাতকারীর রক্ত ছাড়া আর কোনভাবেই সেই দেশের নাপাকী ঢাকা দেওয়া যায় না। 34তোমরা যে দেশে থাকবে আমিও সেখানে থাকব বলে সেই দেশ নাপাক করা চলবে না। আমি মাবুদ বনি-ইসরাইলদের মধ্যে বাস করি।”