রোমীয় 5
ধার্মিক বলে গ্রহণের ফল
1ঈমানের মধ্য দিয়েই আমাদের ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হয়েছে আর তার ফলেই হযরত ঈসা মসীহের মধ্য দিয়ে আল্লাহ্ও আমাদের মধ্যে শান্তি হয়েছে। 2আল্লাহ্র এই যে রহমতের পথে এখন আমরা চলছি সেখানে আমরা মসীহের মধ্য দিয়ে ঈমানের দ্বারাই পৌঁছেছি। আল্লাহ্র মহিমা পাবার আশায় আমরা আনন্দ বোধ করছি। 3কেবল তা-ই নয়, দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও আমরা আনন্দ বোধ করছি, কারণ আমরা জানি দুঃখ-কষ্টের ফল ধৈর্য, 4ধৈর্যের ফল খাঁটি স্বভাব এবং খাঁটি স্বভাবের ফল আশা। 5এই আশা আমাদের লজ্জায় ফেলে না, কারণ আল্লাহ্তাঁর দেওয়া পাক-রূহের দ্বারা আমাদের দিল তাঁরই মহব্বত দিয়ে পূর্ণ করেছেন।
6যখন আমাদের কোন শক্তিই ছিল না তখন ঠিক সময়েই মসীহ্আল্লাহ্র প্রতি ভয়হীন মানুষের জন্য, অর্থাৎ আমাদের জন্য প্রাণ দিলেন। 7কোন সৎ লোকের জন্য কেউ প্রাণ দেয় না বললেই চলে। যিনি অন্যের উপকার করেন সেই রকম লোকের জন্য হয়তো বা কেউ সাহস করে প্রাণ দিলেও দিতে পারে। 8কিন্তু আল্লাহ্যে আমাদের মহব্বত করেন তার প্রমাণ এই যে, আমরা গুনাহ্গার থাকতেই মসীহ্আমাদের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন।
9তাহলে মসীহের রক্তের দ্বারা যখন আমাদের ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হয়েছে তখন আমরা মসীহের মধ্য দিয়েই আল্লাহ্র শাস্তি থেকে নিশ্চয়ই রেহাই পাব। 10আমরা যখন আল্লাহ্র শত্রু ছিলাম তখন তাঁরই পুত্রের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁর সংগে আমাদের মিলন হয়েছে। এইভাবে মিলন হয়েছে বলে মসীহের জীবন দ্বারা আমরা নিশ্চয়ই নাজাত পাব। 11কেবল তা-ই নয়, যাঁর দ্বারা আল্লাহ্র সংগে আমাদের মিলন হয়েছে সেই হযরত ঈসা মসীহের মধ্য দিয়ে আল্লাহ্কে নিয়ে আমরা আনন্দও বোধ করছি।
হযরত আদম ও হযরত ঈসা মসীহ্
12একটি মানুষের মধ্য দিয়ে গুনাহ্দুনিয়াতে এসেছিল ও সেই গুনাহের মধ্য দিয়ে মৃত্যুও এসেছিল। সব মানুষ গুনাহ্করেছে বলে এইভাবে সকলের কাছেই মৃত্যু উপস্থিত হয়েছে। 13মূসার শরীয়ত দেবার আগেই দুনিয়াতে গুনাহ্ছিল, কিন্তু শরীয়ত না থাকলে তো গুনাহ্কে গুনাহ্বলে ধরা হয় না। 14তবুও আদমের সময় থেকে শুরু করে মূসার সময় পর্যন্ত সকলের উপরেই মৃত্যু রাজত্ব করছিল। এমন কি, আল্লাহ্র হুকুম অমান্য করে যারা আদমের মত গুনাহ্করে নি তাদের উপরেও মৃত্যু রাজত্ব করছিল।
যাঁর আসবার কথা ছিল আদম ছিলেন একদিক থেকে সেই ঈসা মসীহেরই ছবি। 15কিন্তু আদমের গুনাহ্যে রকম, আল্লাহ্র বিনামূল্যের দান সেই রকম নয়। যখন একজন লোকের গুনাহের ফলে অনেকে মরল তখন আল্লাহ্র রহমতের এবং আর একজন মানুষের দয়ার মধ্য দিয়ে যে দান আসল, তা সেই অনেকের জন্য আরও কত না বেশী করে উপ্চে পড়ল! সেই আর একজন মানুষ হলেন ঈসা মসীহ্। 16আল্লাহ্র দান আদমের গুনাহের ফলের মত নয়, কারণ একটা গুনাহের বিচারের ফলে সব মানুষকেই শাস্তির যোগ্য বলে ধরা হয়েছে, কিন্তু ধার্মিক বলে আল্লাহ্র গ্রহণযোগ্য হওয়ার এই যে রহমতের দান, তা অনেক গুনাহের ফলে এসেছে। 17একজন মানুষের গুনাহের দরুন মৃত্যু সেই একজনের মধ্য দিয়েই রাজত্ব করতে শুরু করেছিল। কিন্তু যারা প্রচুর পরিমাণে আল্লাহ্র রহমত ও ধার্মিক বলে তাঁর গ্রহণযোগ্য হওয়ার দান পায়, তারা সেই একজন মানুষের, অর্থাৎ ঈসা মসীহের মধ্য দিয়ে জীবনের পরিপূর্ণতা নিয়ে নিশ্চয়ই রাজত্ব করবে।
18তাহলে একটা গুনাহের মধ্য দিয়ে যেমন সব মানুষকেই শাস্তির যোগ্য বলে ধরা হয়েছে, তেমনি একটা ন্যায় কাজের মধ্য দিয়ে সব মানুষকেই ধার্মিক বলে গ্রহণ করবার ব্যবস্থাও করা হয়েছে এবং তার ফল হল অনন্ত জীবন। 19যেমন একজন মানুষের অবাধ্যতার মধ্য দিয়ে অনেককেই গুনাহ্গার বলে ধরা হয়েছিল, তেমনি একজন মানুষের বাধ্যতার মধ্য দিয়ে অনেককেই ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হবে। 20শরীয়ত দেওয়া হল যাতে অন্যায় বেড়ে যায়, কিন্তু যেখানে অন্যায় বাড়ল সেখানে আল্লাহ্র রহমতও আরও অনেক পরিমাণে বাড়ল। 21সেই রহমত এইজন্য বাড়ল যাতে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যেমন গুনাহ্রাজত্ব করেছিল, তেমনি মানুষকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করবার মধ্য দিয়ে এখন তাঁর রহমত রাজত্ব করতে পারে; আর তারই ফল হল আমাদের হযরত ঈসা মসীহের মধ্য দিয়ে অনন্ত জীবন লাভ।