মার্ক 11

15জেরুজালেমে পৌঁছে ঈসা বায়তুল-মোকাদ্দসে ঢুকলেন এবং সেখানে যারা বেচা-কেনা করছিল তাদের তাড়িয়ে দিলেন। তিনি টাকা বদল করে দেবার লোকদের টেবিল ও যারা কবুতর বিক্রি করছিল তাদের বসবার জায়গা উল্টে ফেললেন। 16বায়তুল-মোকাদ্দসের উঠানের মধ্য দিয়ে তিনি কোন বেচা-কেনার জিনিস নিয়ে যেতে দিলেন না। 17পরে শিক্ষা দেবার সময় তিনি সেই লোকদের বললেন, “কিতাবে কি এই কথা লেখা নেই যে, ‘আমার ঘরকে সমস্ত জাতির মুনাজাতের ঘর বলা হবে’? কিন্তু তোমরা এটাকে ডাকাতের আড্ডাখানা করে তুলেছ!”

18প্রধান ইমামেরা ও আলেমেরা এই কথা শুনে ঈসাকে হত্যা করবার উপায় খুঁজতে লাগলেন। তাঁরা তাঁকে ভয় করতেন, কারণ লোকেরা তাঁর শিক্ষায় আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল।

19সন্ধ্যা হলে পর সাহাবীদের নিয়ে তিনি শহরের বাইরে চলে গেলেন।

মার্ক 11

হযরত ঈসা মসীহ্‌কার অধিকারে কাজ করেন?

27পরে ঈসা ও তাঁর সাহাবীরা আবার জেরুজালেমে গেলেন। তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসে হেঁটে বেড়াচ্ছেন এমন সময় প্রধান ইমামেরা, আলেমেরা ও বৃদ্ধ নেতারা তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, 28“তুমি কোন্‌অধিকারে এই সব করছ? কে তোমাকে এই অধিকার দিয়েছে?”

29জবাবে ঈসা বললেন, “আমি আপনাদের একটা কথা জিজ্ঞাসা করব। আপনারা যদি আমাকে উত্তর দিতে পারেন তবে আমিও আপনাদের বলব আমি কোন্‌অধিকারে এই সব করছি। 30বলুন দেখি, তরিকাবন্দী দেবার অধিকার ইয়াহিয়া আল্লাহ্‌র কাছ থেকে পেয়েছিলেন, না মানুষের কাছ থেকে পেয়েছিলেন?”

31তখন তাঁরা নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা করলেন, “আমরা যদি বলি, ‘আল্লাহ্‌র কাছ থেকে,’ তাহলে সে বলবে, ‘তবে আপনারা তাঁকে বিশ্বাস করেন নি কেন?’ 32আবার যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তবে?”

তাঁরা লোকদের ভয় করতেন, কারণ সবাই ইয়াহিয়াকে সত্যিই একজন নবী বলে মনে করত। 33সেইজন্য তাঁরা বললেন, “আমরা জানি না।”

লূক 20

45লোকেরা যখন ঈসার কথা শুনছিল তখন ঈসা তাঁর সাহাবীদের বললেন, 46“আলেমদের বিষয়ে সাবধান হও। তাঁরা লম্বা লম্বা কোর্তা পরে ঘুরে বেড়াতে চান এবং হাটে-বাজারে সম্মান পেতে ভালবাসেন। তাঁরা মজলিস-খানায় প্রধান প্রধান আসনে ও মেজবানীর সময়ে সম্মানের জায়গায় বসতে ভালবাসেন। 47এক দিকে তাঁরা লোককে দেখাবার জন্য লম্বা লম্বা মুনাজাত করেন, অন্য দিকে বিধবাদের সম্পত্তি দখল করেন। এই লোকদের অনেক বেশী শাস্তি হবে।”

লূক 21

গরীব বিধবার দান

1এর পরে ঈসা চেয়ে দেখলেন, ধনী লোকেরা বায়তুল-মোকাদ্দসের দানের বাক্সে তাদের দান রাখছে। 2তিনি দেখলেন, একজন গরীব বিধবা এসে দু’টা পয়সা রাখল। 3তখন ঈসা তাঁর সাহাবীদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এই গরীব বিধবা অন্য সকলের চেয়ে অনেক বেশী রাখল, 4কারণ অন্যেরা সবাই তাদের প্রচুর ধন থেকে দান করেছে, কিন্তু এই স্ত্রীলোকটির অভাব থাকলেও বেঁচে থাকবার জন্য তার যা ছিল সমস্তই দিয়ে দিল।”

কেয়ামতের আলামত

5সাহাবীদের মধ্যে কয়েকজন বায়তুল-মোকাদ্দসের বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। তাঁরা বলছিলেন, সুন্দর সুন্দর পাথর ও দানের জিনিস দিয়ে দালানটা কেমন সাজানো হয়েছে। তখন ঈসা বললেন, 6“তোমরা তো এই সব দেখছ, কিন্তু এমন দিন আসবে যখন এর একটা পাথরের উপরে আর একটা পাথর থাকবে না; সমস্তই ভেংগে ফেলা হবে।”

7সাহাবীরা ঈসাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “হুজুর, কখন এই সব হবে এবং কোন্‌চিহ্ন দেখে আমরা বুঝতে পারব যে, এই সব ঘটবার সময় এসেছে?”

8জবাবে ঈসা বললেন, “দেখো, কেউ যেন তোমাদের না ঠকায়, কারণ অনেকে আমার নাম নিয়ে এসে বলবে, ‘আমিই মসীহ্‌’ এবং ‘সময় কাছে এসেছে।’ তাদের পিছনে যেয়ো না। 9তোমরা যখন যুদ্ধের ও বিদ্রোহের খবর শুনবে তখন ভয় পেয়ো না, কারণ প্রথমে এই সব হবেই; কিন্তু তখনই যে শেষ সময় আসবে তা নয়।”

10তারপর ঈসা তাঁদের বললেন, “এক জাতি আর এক জাতির বিরুদ্ধে এবং এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। 11ভীষণ ভূমিকমপ হবে এবং ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় দুর্ভিক্ষ ও মহামারী হবে। এছাড়া আসমানে এমন সব ঘটনা ঘটবে ও চিহ্ন দেখা যাবে যা ভীষণ ও ভয়ংকর।

12“এই সব হবার আগে লোকেরা তোমাদের ধরবে এবং তোমাদের উপর জুলুম করবে। বিচারের জন্য তারা তোমাদের মজলিস-খানায় নিয়ে যাবে এবং জেলে দেবে। আমার জন্য বাদশাহ্‌দের ও শাসনকর্তাদের সামনে তোমাদের নেওয়া হবে, 13আর তাতে আমার সম্বন্ধে সাক্ষ্য দেবার জন্য তোমাদের সুযোগ হবে। 14তোমরা এখনই মনে মনে ঠিক করে ফেল, তখন নিজের পক্ষে কথা বলবার জন্য তোমরা আগে থেকে তৈরী হবে না, 15কারণ আমি তোমাদের এমন কথা ও এমন জ্ঞান যুগিয়ে দেব যার জবাবে তোমাদের শত্রুরা কিছু বলতেও পারবে না এবং তা অস্বীকারও করতে পারবে না। 16তোমাদের মা-বাবা, ভাই-বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনেরা তোমাদের ধরিয়ে দেবে। তারা তোমাদের কাউকে কাউকে হত্যাও করবে। 17আমার জন্য সবাই তোমাদের ঘৃণা করবে, 18কিন্তু কোনমতেই তোমাদের একটা চুলও ধ্বংস হবে না। 19তোমরা স্থির থাকলে তোমাদের সত্যিকারের জীবন পূর্ণতা লাভ করবে।

লূক 20

45লোকেরা যখন ঈসার কথা শুনছিল তখন ঈসা তাঁর সাহাবীদের বললেন, 46“আলেমদের বিষয়ে সাবধান হও। তাঁরা লম্বা লম্বা কোর্তা পরে ঘুরে বেড়াতে চান এবং হাটে-বাজারে সম্মান পেতে ভালবাসেন। তাঁরা মজলিস-খানায় প্রধান প্রধান আসনে ও মেজবানীর সময়ে সম্মানের জায়গায় বসতে ভালবাসেন। 47এক দিকে তাঁরা লোককে দেখাবার জন্য লম্বা লম্বা মুনাজাত করেন, অন্য দিকে বিধবাদের সম্পত্তি দখল করেন। এই লোকদের অনেক বেশী শাস্তি হবে।”

Book or keyword Luke 21:1-19:1-20 ... no results. Search again

লূক 21

37সেই সময় ঈসা প্রত্যেক দিনই বায়তুল-মোকাদ্দসে শিক্ষা দিতেন, কিন্তু রাতের বেলা বাইরে গিয়ে জৈতুন পাহাড়ে থাকতেন। 38সমস্ত লোক তাঁর কথা শুনবার জন্য খুব সকালেই বায়তুল-মোকাদ্দসে উপস্থিত হত।

লূক 22

হযরত ঈসা মসীহ্‌কে হত্যা করবার ষড়যন্ত্র

1সেই সময় ইহুদীদের খামিহীন রুটির ঈদ কাছে এসে গিয়েছিল। এটাকে উদ্ধার-ঈদও বলা হয়। 2প্রধান ইমামেরা ও আলেমেরা ঈসাকে গোপনে হত্যা করবার উপায় খুঁজছিলেন, কারণ তাঁরা লোকদের ভয় করতেন।

3এই সময় এহুদা, যাকে ইষ্কারিয়োৎ বলা হত, তার ভিতরে শয়তান ঢুকল। এই এহুদা ছিল ঈসার বারোজন সাহাবীদের মধ্যে একজন। 4কেমন করে ঈসাকে প্রধান ইমামদের ও বায়তুল-মোকাদ্দসের কর্মচারীদের হাতে ধরিয়ে দেবে এই বিষয়ে সে গিয়ে তাঁদের সংগে পরামর্শ করল। 5এতে তাঁরা খুব খুশী হয়ে এহুদাকে টাকা দিতে স্বীকার করলেন। 6তখন এহুদা রাজী হয়ে উপযুক্ত সুযোগ খুঁজতে লাগল যাতে লোকদের অনুপস্থিতিতে ঈসাকে ধরিয়ে দিতে পারে।

শেষ উদ্ধার-ঈদের মেজবানী

7-8 খামিহীন রুটির ঈদের দিনে উদ্ধার-ঈদের মেজবানীর জন্য ভেড়ার বাচ্চা জবাই করা হত। সেই দিনটা উপস্থিত হলে পর ঈসা পিতর ও ইউহোন্নাকে এই বলে পাঠিয়ে দিলেন, “তোমরা গিয়ে আমাদের জন্য উদ্ধার-ঈদের মেজবানী প্রস্তুত কর যেন আমরা তা খেতে পারি।”

9তাঁরা ঈসাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কোথায় এই মেজবানী আমাদের প্রস্তুত করতে বলেন?”

10-11 ঈসা বললেন, “দেখ, তোমরা যখন শহরে ঢুকবে তখন একজন পুরুষ লোককে এক কলসী পানি নিয়ে যেতে দেখবে। তার পিছন পিছন গিয়ে সে যে ঘরে ঢুকবে সেই ঘরের মালিককে বলবে, ‘হুজুর জানতে চাইছেন, তিনি সাহাবীদের সংগে যেখানে উদ্ধার-ঈদের মেজবানী খেতে পারেন সেই মেহমান্তঘরটা কোথায়?” 12তখন সে তোমাদের উপরতলার একটা সাজানো বড় ঘর দেখিয়ে দেবে; সেখানেই সব কিছু প্রস্তুত কোরো।”

13ঈসা তাঁদের যেমন বলেছিলেন, তাঁরা গিয়ে সব কিছু সেই রকমই দেখতে পেলেন এবং উদ্ধার-ঈদের মেজবানী প্রস্তুত করলেন। 14তারপর সময় মত ঈসা সাহাবীদের সংগে খেতে বসলেন। 15তিনি তাঁদের বললেন, “আমি কষ্টভোগ করবার আগে তোমাদের সংগে উদ্ধার-ঈদের এই মেজবানী খাবার আমার খুবই ইচ্ছা ছিল। 16আমি তোমাদের বলছি, আল্লাহ্‌র রাজ্যে এর উদ্দেশ্য পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আমি আর কখনও এই মেজবানী খাব না।”

17এর পর ঈসা পেয়ালা নিলেন এবং আল্লাহ্‌কে শুকরিয়া জানিয়ে বললেন, “তোমাদের মধ্যে এটা ভাগ করে নাও, 18কারণ আমি তোমাদের বলছি, এখন থেকে আল্লাহ্‌র রাজ্য না আসা পর্যন্ত আমি আর কখনও আংগুর ফলের রস খাব না।”

19তারপর তিনি রুটি নিয়ে আল্লাহ্‌কে শুকরিয়া জানালেন। পরে সেই রুটি টুকরা টুকরা করে সাহাবীদের দিয়ে বললেন, “এটা আমার শরীর যা তোমাদের জন্য দেওয়া হবে। আমাকে মনে করবার জন্য এই রকম কোরো।”

20খাওয়ার পরে সেইভাবে তিনি পেয়ালাটা তাঁদের দিয়ে বললেন, “আমার রক্তের দ্বারা আল্লাহ্‌র যে নতুন ব্যবস্থা বহাল করা হবে সেই ব্যবস্থার চিহ্ন হল এই পেয়ালা। আমার এই রক্ত তোমাদের জন্য দেওয়া হবে। 21দেখ, যে আমাকে ধরিয়ে দেবে তার হাত আমার হাতের সংগে এই টেবিলের উপরেই আছে। 22আল্লাহ্‌যা ঠিক করে রেখেছেন সেই ভাবেই ইব্‌ন্তেআদম মারা যাবেন বটে; কিন্তু হায় সেই লোক, যে তাঁকে ধরিয়ে দেয়!”

23সাহাবীরা একে অন্যকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন যে, তাঁদের মধ্যে কে এমন কাজ করবেন।

সাহাবীদের সংগে হযরত ঈসা মসীহের কথাবার্তা

24কাকে সবচেয়ে বড় বলা হবে এ নিয়ে সাহাবীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হল। 25ঈসা তাঁদের বললেন, “অ-ইহুদীদের মধ্যেই বাদশাহ্‌রা প্রভুত্ব করেন আর তাদের শাসনকর্তাদের উপকারী নেতা বলা হয়, 26কিন্তু তোমাদের মধ্যে এই রকম হওয়া উচিত নয়। তোমাদের মধ্যে যে সবচেয়ে বড়, সে বরং সবচেয়ে যে ছোট তারই মত হোক, আর যে নেতা, সে সেবাকারীর মত হোক। 27কে বড়, যে খেতে বসে, না যে চাকর পরিবেশন করে? যে খেতে বসে, সে নয় কি? কিন্তু আমি তোমাদের মধ্যে সেবাকারীর মত হয়েছি।

28“আমার সব দুঃখ-কষ্টের সময়ে তোমরা আমাকে ছেড়ে যাও নি। 29আমার পিতা যেমন আমাকে শাসন্তক্ষমতা দান করেছেন তেমনি আমিও তোমাদের ক্ষমতা দান করছি। 30এতে আমার রাজ্যে তোমরা আমার সংগে খাওয়া-দাওয়া করবে এবং সিংহাসনে বসে ইসরাইলের বারোটি গোষ্ঠীর বিচার করবে।

31“শিমোন, শিমোন, দেখ, শয়তান তোমাদের গমের মত করে চালুনি দিয়ে চেলে দেখবার অনুমতি চেয়েছে। 32কিন্তু আমি তোমার জন্য মুনাজাত করেছি যেন তোমার ঈমানে ভাংগন না ধরে। তুমি যখন আমার কাছে ফিরে আসবে তখন তোমার এই ভাইদের শক্তিশালী করে তুলো।”

33পিতর ঈসাকে বললেন, “হুজুর, আপনার সংগে আমি জেলে যেতে এবং মরতেও প্রস্তুত আছি।”

34জবাবে ঈসা বললেন, “পিতর, আমি তোমাকে বলছি, আজ মোরগ ডাকবার আগে তুমি তিন বার আমাকে অস্বীকার করে বলবে যে, তুমি আমাকে চেন না।”

35তারপর ঈসা তাঁর সাহাবীদের বললেন, “আমি যখন তোমাদের টাকার থলি, ঝুলি ও জুতা ছাড়া পাঠিয়েছিলাম তখন কি তোমাদের কোন অভাব হয়েছিল?”

সাহাবীরা বললেন, “জ্বী না, হয় নি।”

36ঈসা বললেন, “কিন্তু এখন আমি বলছি, যার টাকার থলি বা ঝুলি আছে সে তা নিয়ে যাক। যার ছোরা নেই সে তার চাদর বিক্রি করে একটা ছোরা কিনুক। 37পাক-কিতাবে লেখা আছে, ‘তাঁকে গুনাহ্‌গারদের সংগে গোণা হল’। আমি তোমাদের বলছি, এই কথা আমার মধ্যেই পূর্ণ হতে হবে, কারণ আমার বিষয়ে যা লেখা আছে তা পূর্ণ হতে যাচ্ছে।”

38তখন সাহাবীরা বললেন, “হুজুর, দেখুন, এখানে দু’টা ছোরা আছে।”

ঈসা জবাব দিলেন, “থাক্‌, আর নয়।”

মুনাজাতের সময়ে হযরত ঈসা মসীহের দুঃখ প্রকাশ

39ঈসা সেই জায়গা ছেড়ে নিজের নিয়ম মত জৈতুন পাহাড়ে গেলেন। তাঁর সাহাবীরা তাঁর পিছনে পিছনে গেলেন। 40ঠিক জায়গায় পৌঁছাবার পর ঈসা তাঁদের বললেন, “মুনাজাত কর যেন পরীক্ষায় না পড়।”

41তারপর ঈসা সাহাবীদের কাছ থেকে কিছু দূরে গিয়ে হাঁটু পেতে মুনাজাত করতে লাগলেন, 42“পিতা, যদি তুমি চাও তবে এই দুঃখের পেয়ালা আমার কাছ থেকে সরিয়ে নাও। তবুও আমার ইচ্ছামত নয়, তোমার ইচ্ছামতই হোক।”

43তখন বেহেশত থেকে একজন ফেরেশতা এসে ঈসাকে শক্তি দান করলেন। 44মনের কষ্টে ঈসা আরও আকুলভাবে মুনাজাত করলেন। তাঁর গায়ের ঘাম রক্তের ফোঁটার মত হয়ে মাটিতে পড়তে লাগল।

45-46 মুনাজাতের পরে তিনি উঠে তাঁর সাহাবীদের কাছে আসলেন। মনের দুঃখে ক্লান্ত হয়ে সাহাবীরা ঘুমিয়ে পড়েছেন দেখে ঈসা তাঁদের বললেন, “কেন ঘুমা"ছ? উঠে মুনাজাত কর যেন পরীক্ষায় না পড়।”

47ঈসা তখনও কথা বলছেন এমন সময় অনেক লোক সেখানে আসল। এহুদা নামে তাঁর বারোজন সাহাবীদের মধ্যে একজন সেই লোকদের আগে আগে আসছিল। এহুদা ঈসাকে চুমু দেবার জন্য তাঁর কাছে আসল। 48তখন ঈসা তাকে বললেন, “এহুদা, চুমু দিয়ে কি ইব্‌ন্তেআদমকে ধরিয়ে দিচ্ছ?”

শত্রুদের হাতে হযরত ঈসা মসীহ্‌

49যাঁরা ঈসার চারপাশে ছিলেন তাঁরা বুঝলেন কি হতে যাচ্ছে। এইজন্য তাঁরা ঈসাকে বললেন, “হুজুর, আমরা কি ছোরা দিয়ে আঘাত করব?”

50সাহাবীদের মধ্যে একজন ছোরার আঘাতে মহা-ইমামের গোলামের ডান কানটা কেটে ফেললেন। 51ঈসা বললেন, “থাক্‌, আর নয়।” এই বলে তিনি লোকটির কান ছুঁয়ে তাকে ভাল করলেন।

52যে সব প্রধান ইমামেরা, বায়তুল-মোকাদ্দসের কর্মচারীরা এবং বৃদ্ধ নেতারা ঈসাকে ধরতে এসেছিলেন ঈসা তাঁদের বললেন, “আমি কি ডাকাত যে, আপনারা ছোরা ও লাঠি নিয়ে এসেছেন? 53বায়তুল-মোকাদ্দসে দিনের পর দিন আমি আপনাদের সামনে ছিলাম, কিন্তু তখন তো আপনারা আমাকে ধরেন নি। তবে এখন অবশ্য আপনাদেরই সময়; অন্ধকারের ক্ষমতা এখন দেখা যাচ্ছে।”

হযরত পিতরের অস্বীকার

54তখন তাঁরা ঈসাকে ধরে মহা-ইমামের বাড়ীতে নিয়ে গেলেন। পিতর দূরে থেকে পিছনে পিছনে যাচ্ছিলেন। 55উঠানের মাঝখানে যারা আগুন জ্বেলে বসে ছিল পিতর এসে তাদের মধ্যে বসলেন। 56একজন চাকরাণী সেই আগুনের আলোতে পিতরকে দেখতে পেল এবং ভাল করে তাকিয়ে দেখে বলল, “এই লোকটাও ওর সংগে ছিল।”

57পিতর অস্বীকার করে বললেন, “আমি ওকে চিনি না।”

58কিছুক্ষণ পরে আর একজন লোক তাঁকে দেখে বলল, “তুমিও তো ওদের একজন।”

পিতর বললেন, “না, আমি নই।”

59এক ঘণ্টা পরে আর একজন জোর দিয়ে বলল, “এই লোকটি নিশ্চয়ই ওর সংগে ছিল, কারণ এ তো গালীল প্রদেশের লোক।”

60পিতর বললেন, “দেখ, তুমি কি বলছ আমি বুঝতে পারছি না।”

পিতরের কথা শেষ হতে না হতেই একটা মোরগ ডেকে উঠল। 61তখন ঈসা মুখ ফিরিয়ে পিতরের দিকে দেখলেন। এতে যে কথা ঈসা তাঁকে বলেছিলেন সেই কথা পিতরের মনে পড়ল, “আজ মোরগ ডাকবার আগে তুমি তিন বার বলবে যে, তুমি আমাকে চেন না।” 62তখন পিতর বাইরে গিয়ে খুব কাঁদতে লাগলেন।

মহাসভার সামনে হযরত ঈসা মসীহের বিচার

63যারা ঈসাকে পাহারা দিচ্ছিল তারা তাঁকে ঠাট্টা করতে ও মারতে লাগল। 64তারা ঈসার চোখ বেঁধে দিয়ে বলল, “বল্‌তো দেখি, কে তোকে মারল?” 65এইভাবে তারা আরও অনেক কথা বলে তাঁকে অপমান করল।

66সকাল হলে পর ইহুদীদের বৃদ্ধনেতারা, প্রধান ইমামেরা এবং আলেমেরা একসংগে জমায়েত হলেন এবং ঈসাকে তাঁদের মহাসভার সামনে এনে বললেন, 67-68 “তুমি যদি মসীহ্‌হও তবে আমাদের বল।”

ঈসা বললেন, “আমি যদি বলি তবুও আপনারা কোনমতেই বিশ্বাস করবেন না এবং আপনাদের কিছু জিজ্ঞাসা করলে জবাব দেবেন না। 69কিন্তু ইব্‌ন্তেআদম এখন থেকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র ডানপাশে বসে থাকবেন।”

70তখন সকলে জিজ্ঞাসা করলেন, “তাহলে তুমি কি ইব্‌নুল্লাহ্‌?”

তিনি তাঁদের বললেন, “আপনারা ঠিকই বলছেন যে, আমিই সে-ই।”

71তখন নেতারা বললেন, “আমাদের আর সাক্ষ্যের কি দরকার? আমরা নিজেরাই তো ওর মুখে শুনলাম।”

লূক 22

ঈসা জবাব দিলেন, “থাক্‌, আর নয়।”

মুনাজাতের সময়ে হযরত ঈসা মসীহের দুঃখ প্রকাশ

39ঈসা সেই জায়গা ছেড়ে নিজের নিয়ম মত জৈতুন পাহাড়ে গেলেন। তাঁর সাহাবীরা তাঁর পিছনে পিছনে গেলেন। 40ঠিক জায়গায় পৌঁছাবার পর ঈসা তাঁদের বললেন, “মুনাজাত কর যেন পরীক্ষায় না পড়।”

41তারপর ঈসা সাহাবীদের কাছ থেকে কিছু দূরে গিয়ে হাঁটু পেতে মুনাজাত করতে লাগলেন, 42“পিতা, যদি তুমি চাও তবে এই দুঃখের পেয়ালা আমার কাছ থেকে সরিয়ে নাও। তবুও আমার ইচ্ছামত নয়, তোমার ইচ্ছামতই হোক।”

43তখন বেহেশত থেকে একজন ফেরেশতা এসে ঈসাকে শক্তি দান করলেন। 44মনের কষ্টে ঈসা আরও আকুলভাবে মুনাজাত করলেন। তাঁর গায়ের ঘাম রক্তের ফোঁটার মত হয়ে মাটিতে পড়তে লাগল।

45-46মুনাজাতের পরে তিনি উঠে তাঁর সাহাবীদের কাছে আসলেন। মনের দুঃখে ক্লান্ত হয়ে সাহাবীরা ঘুমিয়ে পড়েছেন দেখে ঈসা তাঁদের বললেন, “কেন ঘুমা"ছ? উঠে মুনাজাত কর যেন পরীক্ষায় না পড়।”

47ঈসা তখনও কথা বলছেন এমন সময় অনেক লোক সেখানে আসল। এহুদা নামে তাঁর বারোজন সাহাবীদের মধ্যে একজন সেই লোকদের আগে আগে আসছিল। এহুদা ঈসাকে চুমু দেবার জন্য তাঁর কাছে আসল। 48তখন ঈসা তাকে বললেন, “এহুদা, চুমু দিয়ে কি ইব্‌ন্তেআদমকে ধরিয়ে দিচ্ছ?”

লূক 22

হযরত পিতরের অস্বীকার

54তখন তাঁরা ঈসাকে ধরে মহা-ইমামের বাড়ীতে নিয়ে গেলেন। পিতর দূরে থেকে পিছনে পিছনে যাচ্ছিলেন।